বর্ষায় সুস্থ থাকুন ভেষজে...

বর্ষার এই সময়ে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগের প্রকোপ বেশি। নানা ধরণের রোগে জনজীবন বিপর্যস্ত। একে তো ময়লাযুক্ত পানি তার উপর ব্যাকটেরিয়ার যন্ত্রণায় ডায়রিয়া, টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, শ্বাস-কষ্টের মত রোগ-বালাই লেগেই থাকে। সংক্রামক এই রোগগুলো থেকে বাঁচতে দরকার পর্যাপ্ত সতর্কতা আর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। জেনে নিতে পারেন, বর্ষায় সুস্থ থাকার উপায়গুলো।

তুলসীর গুণাগুণের কথা বলে শেষ করা কঠিন। এতে রয়েছে উপকারী সব এন্টিঅক্সিডেন্ট যা খুব উচ্চমানের জীবানু প্রতিরোধক। ঠাণ্ডা, কাশি আর শ্বাসকষ্ট জনিত সকল রোগের এক মহৌষধ। ফুসফুসের রোগেও এটি বেশ কার্যকরী। তাই বর্ষায় নিয়ম করে তুলসী চা বা তুলসী পাতার রস খেলে আপনি অনেক সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাবেন।

তরকারিতে যে হলুদ ব্যবহার করা হয় তাতে রয়েছে এমন সব উপাদান যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। এছাড়াও অন্যান্য রোগ প্রতিরোধক হিসেবেও হলুদের জুড়ি নেই। তাই দুধ বা সবজি যেকোন কিছুর সাথেই মিশিয়ে খেতে পারেন হলুদ। তবে খেতে হবে পরিমিত পরিমাণে কারণ অতিরিক্ত হলুদের একটি উৎকট গন্ধ আছে।

আমরা সবাই কম বেশি রসুনের উপকারিতা সম্পর্কে জানি। যেকোন ধরণের কাশি, ঠাণ্ডায় রসুন ভাজা তেলে মালিশ সচরাচর সবাই দেয়, এতে অবশ্য কাজও হয়। তবে জেনে রাখা ভালো, কাঁচা রসুন বেশি উপকারী। এতে থাকে এমন কিছু এন্টিঅক্সিডেন্টের সমন্বয় যা একই সাথে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের বিরুদ্ধে কাজ করে। রসুনে উপস্থিত এলিসিন নামক উপাদানের কারণেই এর তীব্র ও ঝাঁঝালো গন্ধ হয়। এই উপাদানটিই মূলত বুকে জমে থাকা কফ পরিস্কার করে। আর এটিই ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া দূর করে এবং ক্যান্সারের মত অসুখের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। রসুন খিঁচুনি, ব্যাথা ও যৌন রোগের চিকিৎসায়ও সমান কার্যকরী।

বর্ষায় হজমের সমস্যা কম বেশি সবারই হয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে খাবারে ত্রিফলা ব্যবহার করুন। ত্রিফলা হচ্ছে তিনটে ফলের সমাহার- আমলকি, হরতকি আর বহেরা যা সবগুলোই উচ্চমানের ভেষজ গুণ সম্পন্ন। এতে অবস্থিত এন্টিঅক্সিডেন্টের সাহায্যে হজম শক্তি বাড়ে। তাছাড়া ঠাণ্ডা, সর্দির মতো সমস্যায় আমলকি খান। বহেরা আর হরতকি জমাট কফ তাড়াতে আর হজমে সাহায্য করবে।

শ্বাস নালী ও শ্বাসযন্ত্রের সকল সমস্যা দূর করতে ব্যবহার করুন যষ্টিমধুর মত উপকারী ভেষজ। তাহলে ঠাণ্ডা, গলা ব্যাথা জাতীয় সমস্যা নিয়ে আর ভাবতেই হবেনা।

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় এক টুকরা আদা লবণ মাখিয়ে খেয়ে নিলে উপকার পাবেন। এটি গলা ব্যাথা বা শ্বাস নালীর সংক্রমণ ও প্রতিরোধ করে। এতে রয়েছে গিঞ্জারোল ও শাওগল নামক উপাদান যা শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।

গলায় খুশ খুশ সমস্যায় চোখ বন্ধ করে এক কাপ দারুচিনি চা খেয়ে ফেলতে পারেন। বর্ষায় সবরকম ঠাণ্ডা জনিত সমস্যার সমাধান হল দারুচিনি চা। 

এই বর্ষায় সুস্থ থাকতে হলে ওষুধের উপর নয় বরং ভরসা রাখুন আপনার খাদ্যতালিকার উপর।