ডিপথেরিয়া হল মানবদেহের শ্বসনতন্ত্রের ব্যাক্টেরিয়ার দ্বারা সৃষ্ট একটি রোগ। এটি সংক্রামক রোগ যা করনিব্যাক্টেরিয়াম ডিপথেরি (Corynebacterium diphtheriae) নামক ব্যাক্টেরিয়ার জন্য দায়ী।

diphtheria vaccine

ডিপথেরিয়া এক ধরণের টক্সিন। এতে একটি এ (A) ও একটি বি (B) অংশ থাকে যা ব্যাক্টেরিয়ার জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী টক্সিন। এটির একটি মাত্র অণু একটি সম্পূর্ণ কোষকে ধ্বংস করে ফেলতে পারে। জীবাণুটি গলা এবং উপরের শ্বাসনালীতে আক্রমণ করে বেশি৷ এছাড়াও ক্ষতস্থান, চোখের কনজাংটিভা, জননাঙ্গ ইত্যাদি স্থানও আক্রান্ত হতে পারে। রোগটি জটিল আকার ধারণ করলে গলা ফুলে যায়। এই রোগটিতে সাধারণত এক বছরের কম বয়সী শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়। তবে বড়রাও ডিপথেরিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে৷ এই সংক্রমণ ফুসফুস, গলা, মুখ এবং ত্বকে হয়।

ডিপথেরিয়ার লক্ষণ 

সাধারণত ডিপথেরিয়া টনসিলে বেশি হয়। ডিপথেরিয়ার লক্ষণগুলো দুই থেকে সাত দিন পরে দেখা দেয়। একশ ডিগ্রীর ওপরে জ্বর থাকে। ক্লান্তি ও শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যায়। গলা ব্যথা ও ঢোক গিলতে সমস্যা, গলার গ্রন্থি ফুলে যায়, বেশি কাশি হয়। সংক্রমণের ফলে ভালো টিস্যু নষ্ট হয়ে মৃত টিস্যুগুলো পুরো ধূসর আবরণ তৈরি করে। একে সিউডোমেমব্রেন বলে। আক্রান্ত হওয়ার ১০-১২ দিনের মধ্যে এসব মারাত্মক উপসর্গ দেখা যায়। এ রোগ হৃৎপিণ্ড এবং স্নায়ুতন্ত্রে ছড়িয়ে পড়লে শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।

ডিপথেরিয়ার চিকিৎসা

ডিপথেরিয়া একটি মারাত্মক রোগ, তাই রোগী খুব দ্রুত মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে। ডিপথেরিয়ায় আক্রান্ত রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। ডিপথেরিয়ার জীবাণুর বিষ নিষ্ক্রিয় করতে জীবাণু শনাক্ত হবার পূর্বেই এ্যান্টিবায়েটিক (পেনিসিলিন বা ইরাথ্রোমাইসিন) জাতীয় ওষুধ দিতে হবে। গলার পর্দা আটকে দম বন্ধ হয়ে গেলে ট্রাকিয়োসটোমি করতে হবে। যেহেতু এটি ছোঁয়াচে রোগ তাই রোগীকে আলাদা রাখতে হবে।

ডিপথেরিয়ার প্রতিকার

শিশুর ডিপথেরিয়া প্রতিরোধের জন্য DTaP টিকা দেয়া হয়। ডিপথেরিয়ার টক্সিনের বিরুদ্ধে অত্যন্ত শক্তিশালী ভ্যাক্সিন আবিস্কৃত হয়েছে। শিশুর জম্মের এক বৎসরের মধ্যে ২৮ দিন পর পর তিন ডোজ ডিপিটি টিকা দিলে তা শিশুকে ডিপথেরিয়া থেকে রক্ষা করে। প্রথম ডোজ ডিপিটি টিকা দেয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো শিশুর ছয় সপ্তাহ বয়সে। শিশুকে যে ডিপিটি (DPT Vaccine) ভ্যাক্সিন (ডিপথেরিয়া পারটুসিস (Pertusis), টিটেনাস (Tetanus)) দেওয়া হয় তা সারা জীবনের জন্য ডিপথেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। এই টিকার তেমন কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় না।

ডিপথেরিয়ার রোগীর সংস্পর্শে সংক্রমণ ঘটতে পারে। রোগীর থুতু থেকেও সংক্রমণ ঘটতে পারে। সুতরাং সচেতন হোন, সুস্থ্য থাকুন। আর যে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যায় সবার আগে যোগাযোগ করুন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে।

Get the latest news on lifestyle, health, food, and more from our team of expert writers. From fitness tips and nutrition advice to travel guides and entertainment news, we cover the topics that matter most to you. Whether you're looking to improve your health, broaden your horizons, or just stay up-to-date with the latest trends, you'll find everything you need here.