আফগানিস্তানে ফের রচিত হলো সাম্রাজ্যবাদের কবর
- Details
- by আবদুস সামাদ আজাদ
আফগানিস্তানে আবারও সাম্রাজ্যবাদের কবর রচিত হলো। দেশটির সাধারণ মানুষের মধ্য থেকে বেরিয়ে এসে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গড়ে উঠা তালেবান যোদ্ধারা তাদের ইস্পাত কঠিন দৃঢ় মনোভাব দিয়ে সাম্রাজ্যবাদের কবর রচনা করলো আরেক বার। এর আগে আফগানিস্তান থেকে রাশিয়াকে তাড়িয়ে দিয়ে গোটা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল দেশটির সাধারণ মানুষের প্রাণের সংগঠন তালেবান।
এবারও ভুল করেনি তালেবান। সাম্রাজ্যবাদের গোরস্থান খ্যাত আফগানিস্তানে যে সাম্রাজ্যবাদীরা বার বার নাকানি-চুবানি খায় তা আবারও প্রমাণ হলো। তালেবান তাদের টার্গেটে কোনো ভুল করেনি। ভয়াবহ যুদ্ধে নামার দরকার হয়নি তাদের। বরং আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষ তাদের সাদরে গ্রহণ করেছে। এ কারণেই আধুনিক বিমান ও সেনাবাহিনী থাকার পরও পশ্চিমা ধ্বজাধারি ঘানি সরকার কিছুই করতে পারেনি। বরং তারা প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে ক্ষমতা হারানোর বেদনায় ভুগেছে।
আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতা দখল কিন্তু আগের মতোই বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ভাবতেই পারেনি আরেকটি সায়গনের ভূত তাদের জন্য অপেক্ষা করছে কাবুলে। বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেদের লজ্জা লুকাতে বার বার বলেছেন আফগানিস্তানে তাদের সায়গনের পরাজয় নেই। কিন্তু তালেবান ঠিকই দেখিয়ে দিল 'আমরা সাম্রাজ্যবাদের আজরাইল’।
প্রথমদিকে তালেবানকে পাত্তাই দেয়নি বহুজাতিক বাহিনী। কিন্তু যখনই ঘোষণা এলো মার্কিন বাহিনী আফগান ছেড়ে দেবে, তখনই প্রস্তুত তালেবান তাদের পা বাড়াতে শুরু করলো। একটু একটু করে চলা পথ ক্রমেই বাতাসের গতি পেতে শুরু করলো। সড়ক পথে তীব্র প্রতিরোধ এবং আফগান জনগণের সহযোগিতা নিয়ে তারা দখল করতে শুরু করলো বর্ডার ক্রসিং, প্রাদেশিক রাজধানী। তাদের চলার গতিতে হতবাক হতে হয়েছে বিশ্ব নেতাদের। আধুনিককালের পরাশক্তি চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের আধুনিক সেনাবাহিনী অনেকটা ‘হা’ করে দেখেছে তালেবানের জনপদ দখলের চিত্র। তাদের একটিই প্রশ্ন- তালেবানের মধ্যে ঠিক 'কোন শক্তি' কাজ করছে?
এদিকে, তালেবান আগের মতো এবার অনেক ভুলে পতিত হয়নি। সর্বশেষ তারা যখন যৌথবাহিনীর কাছে ক্ষমতা হারিয়েছিল, তখন তাদের ঝুলিতে অনেক 'ভুল বোঝাবুঝি বা দুর্বলতা' ছিল। কিন্তু এবার পরিলক্ষিত হয়েছে সেই তালেবান আর এই তালেবানের মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। যদিও তাদের মূল উদ্দেশ্য একই- একটি কল্যাণমূলক ইসলামি রাষ্ট্র। পার্থক্যের জায়গা হয়েছে চিন্তায়, আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ার ভাবনায়। এজন্য তারা বার বার জানিয়ে দিয়েছে, তালেবান ক্ষমতায় গেলে নারীদের ব্যাপারে আধুনিক ও যুগোপযোগী ব্যবস্থা নেবে। রক্তপাত ঘটাবে না। বাস্তবেও হয়েছে কিন্তু তা-ই। বিনা রক্তপাতেই তারা জনপদের পর জনপদ দখল করেছে জনগণের ভালবাসা নিয়ে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর