দক্ষিণ আফ্রিকায় ভয়াবহ বর্ষণ-বন্যা, মৃত্যু বেড়ে ৩৪০

ভারী বর্ষণ এবং বন্যায় ডারবান শহরসহ দক্ষিণ আফ্রিকার পূর্ব কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশে কমপক্ষে ৩৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগামী দিনে আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কর্মকর্তাদের আশঙ্কা মৃতের সংখ্যা বাড়বে, কারণ পুরো পরিবারসহ অনেক লোক এখনও নিখোঁজ। ন্যাশনাল নিউজ।

দক্ষিণ আফ্রিকায় ভয়াবহ বর্ষণ-বন্যা

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বৃহস্পতিবার পূর্ব উপকূলের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের দেখতে যান। রামাফোসা ভুক্তভোগীদের বলেন, আপনারা আমাদের দেখা সবচেয়ে বড় দুর্যোগের সাথে লড়াই করছেন। আমরা ভেবেছিলাম এ ধরনের বন্যা কেবল মোজাম্বিক বা জিম্বাবুয়ের মতো দেশে ঘটে থাকে।

ডারবান এবং আশেপাশের ইথেকউইনি মেট্রোপলিটন এলাকার ক্ষতি আনুমানিক ৫২ মিলিয়ন ডলার। ইথেকউইনির মেয়র ম্যাক্সলোসি কাউন্ডা গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী অ্যাঞ্জি মোতশেকগা জানিয়েছেন, বন্যায় বিভিন্ন স্কুলের অন্তত ১৮ জন ছাত্র এবং একজন শিক্ষক মারা গেছে। কর্মকর্তারা প্রদেশের সব স্কুল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছেন।

বন্যায় ভেসে গেছে ঘর-বাড়ি, গাড়ি

অবিরাম বর্ষণ প্রদেশে বিপর্যয় সৃষ্টি ও বাড়িঘর ধ্বংস করেছে। ভবন ধসে পড়েছে। প্রধান সড়কগুলো ভেসে গেছে। মোজাম্বিকও গত এক দশকে ধারাবাহিক ভয়াবহ বন্যার শিকার হয়েছে। যার মধ্যে একটি বন্যায় গত মাসে ৫০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল।

বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে আফ্রিকার দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে আগামী কয়েক দশকে এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ আরও বেশি আঘাত হানবে। এই সাম্প্রতিকতম বৃষ্টিগুলো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় নয় বরং একটি কাট-অফ লো নামক আবহাওয়া ব্যবস্থার কারণে সৃষ্ট। যা বেশিরভাগ অংশে বৃষ্টি এবং ঠাণ্ডা আবহাওয়া নিয়ে এসেছে।

এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, পুলিশ ডারবানের রিজার্ভার হিলস এলাকার বাসিন্দাদের ছত্রভঙ্গ করতে স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করেছে। বাসিন্দারা সরকারি সহায়তার অভাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স পরিস্থিতি সামলাতে সেনা পাঠিয়েছে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বন্যার কারণে ডারবান এবং আশেপাশের ইথেকউইনি মেট্রোপলিটন এলাকার বড় অংশ পানি ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পরিষেবাগুলো পুনরুদ্ধার করতে অন্তত এক সপ্তাহ সময় লাগবে। দুর্যোগে সাব-সাহারান আফ্রিকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্দরেও কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।