মাশরাফির ঝড়ে লড়াকু স্কোর বাংলাদেশের

ইংলিশদের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ২৩৮ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। এই রান করতে হারাতে হয়েছে আট উইকেট। সর্বোচ্চ ৭৫ রান এসেছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকে। সেরা ব্যাটসম্যানদের বড় ইনিংস খেলতে না পারার পরও এই রান হয়েছে শেষ দিকে ২৯ বলে মাশরাফির ৪৪ রানের ঝড়ে।

ইংলিশদের হয়ে ক্রিস ওকস, আদিল রশিদ ও জ্যাক বল দুটি করে উইকেট নেন। ২৩৮ রান তেমন বড় স্কোর না হলেও, আজকের উইকেটে এটিকেই মনে হচ্ছে লড়াকু স্কোর। শুক্রবারের উইকেটের তুলনায় আজকের উইকেট বেশ স্লো।

ওপেনিং জুটিতে ঠিকঠাকই এগোচ্ছিলেন তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। প্রথম ম্যাচে ছয় মেরে ইনিংস শুরু করা ইমরুল এদিন শুরু করেন চার মেরে। আকাশ মেঘলা ছিলো টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠান জস বাটলার। কিন্তু দুই ওপেনার দারুণ শুরু হয়তো কিছুটা বিচলিতই করে তুলছিলো তাকে।

দুই তিন ওভার যাওয়ার বাটলার পাতলেন শর্ট বলের ফাঁদ। সেই ফাঁদে একবার পা দিয়েও বেঁচে যান তামিম। তবে ইমরুল টিকতে পারেননি। ক্রিস ওকসের শর্ট বলে ডিপ স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন তিনি। এর একটু আগেই লেগের দিকে ফিল্ডিং শক্তিশালী করেন জস বাটলার।

ওকস এক ওভার পর শিকার করেন তামিম ইকবালকেও। ইংলিশদের শর্ট বলের ফাঁদ বুঝতে ব্যর্থ হন তিনিও। তামিম- ইমরুল মিলে খেলে ফেলেছেন ২০০-এর বেশি ওয়ানডে। তারপরও প্রতিপক্ষের কৌশল বোঝায় নিদারুণ ব্যর্থতার পরিচয়ই দেন এ দুজন।

ওপেনারদের বিদায়ের পর ২১ বলে তিন করে বিদায় নেন সাব্বির রহমান। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচে তিন নম্বরে প্রমোশন পেলেও এই ম্যাচে ব্যর্থ তিনি। চতুর্থ উইকেটে হাল ধরেন মাহমুদুল্লাহ ও মুশফিক। ৫০ রানে জুটি গড়েন তারা।

২১ রান করে বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ৪০০০ রানের ক্লাবে ঢুকে যান মুশফিক। মুশফিকও বিদায় নেন শর্ট বলের ধাঁধায় পড়ে। রিয়াদের সঙ্গে ২৪ রানে জুটি গড়েন সাকিব। এই জুটির নির্ভর করে আরো বড় রানের স্বপ্ন দেখছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু বেন স্টোকসের বাউন্সার ফ্লিক করতে গিয়ে উইকেটের পিছনে ধরা পড়েন সাকিব। তার গ্লাভস ছুঁয়ে বল জমে জস বাটলারের হাতে।

তখনও এক প্রান্ত আগলে রেখেছেন মাহমুদুল্লাহ। ক্রমেই তিনি এগিয়ে যাচ্ছিলেন অ্যাডিলেডের স্মৃতি ফিরিয়ে আনার দিকে। কিন্তু আদিল রশিদের লেগস্পিনে তাকে থামতে হয় ৭৫ রানে। এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন মাহমুদুল্লাহ। রশিদ আউটের আবেদন করার পরপরই আঙুল তুলে দেন। রিয়াদও নিজের শাপশাপান্ত করতে করতে হাঁটতে থাকেন ড্রেসিংরুমের দিকে। হঠাৎই দাঁড়িয়ে পড়েন তিনি, আবেদন করেন রিভিউয়ের। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায়, আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই ঠিক।

মাহমুদুল্লাহ বিদায় নেয়ার আগে মোসাদ্দেককে নিয়ে গড়েন ৪৮ রানের জুটি। কিন্তু রিয়াদের বিদায়ের পর টিকেননি মোসাদ্দেক। ২৯ রান করে তিনিও ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন। পরে জুটি গড়েন অনেক দিন পর একাদশে ফেরা নাসির ও মাশরাফি। এই জুটিতেই ব্যাটিংয়ের পুরোনো রূপ দেখান মাশরাফি।

উইকেটে নেমেই নিজের দ্বিতীয় বলে মঈন আলিকে ছয় মারেন মাশরাফি। চার বলে কোনো রান না নিয়ে আবারও মঈনকে সীমানায় আছড়ে ফেলেন মাশরাফি। বহুদিন পর আবার আন্তর্জাতিক ম্যাচে ব্যাট হাতে মাশরাফিকে জ্বলে উঠতে দেখা যায়। গত বছর জুনে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ত্রিশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। আজ রান আউটের ফাঁদে পড়ার আগে মাশরাফি ২৯ বলে দুই চার ও তিন ছয়ে করেন ৪৪ রান। নাসির অপরাজিত থাকেন ২৭ বলে ২৭ রান করে।

মাশরাফির ২৯ বলে ৪৪ রানের ঝড়েই মূলত ২০০ ছাড়িয়ে লড়াকু এই ইনিংসটি গড়ে বাংলাদেশ। এখন বোলাররা যদি তাদের কাজ ঠিকঠাক করতে পারেন, তবে সিরিজে ফেরার সুযোগ তৈরি করতে পারে বাংলাদেশ। না দেশের মাটিতে টানা ছয় সিরিজ জেতার পর এই সিরিজে এক ম্যাচ হাতে রেখেই হারতে হতে পারে মাশরাফিদের। 

আপনি আরো পড়তে পারেন

মুশফিকুর রহিমের নতুন অর্জন

নাসির ফিরলেন, কতোটা লাভ হবে বাংলাদেশের?

আজ দেখা যেতে পারে নাসিরকে

দুই প্রস্তুতি ম্যাচের দুই দল ঘোষণা করলো বিসিবি

নাসির কার জায়গায় খেলবেন, প্রশ্ন বিসিবি সভাপতির