এমন লজ্জা আগে পায়নি অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাস মানেই সাফল্যের জয়জয়কার। তারা সাত বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলে জিতেছে পাঁচটি। এতোগুলো বিশ্বকাপ জেতার নজির নেই আর কোনো দেশের। বর্তমানেও তারা ওয়ানডের এক নম্বর দল। সেই তাদেরকেই পরপর পাঁচটি ওয়ানডেতে হারিয়ে দিলো প্রোটিয়ারা, যারা কোনোদিন বিশ্বকাপের ফাইনালেই উঠতে পারেনি!

গতকাল লজ্জা এড়ানোর শেষ সুযোগ ছিলো অস্ট্রেলিয়ার সামনে। কিন্তু কেপটাউনের নিউল্যান্ডে পারেনি অসিরা। ১৩৬ বলে ১৭৩ রানের মহাকাব্যিক এক ইনিংস খেলেও দলের হার ঠেকাতে পারেননি ডেভিড ওয়ার্নার। গতকালের ম্যাচটিতে ৩১ রানে জিতে যায় প্রোটিয়ারা।

ম্যাচের প্রথম ইনিংসে রিলি রুশোর তৃতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি (১২২) ও জেপি ডুমিনির ৭৩ রানে ভর করে ৩২৭ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ৪৮.২ ওভারে ২৯৬ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। ডেভিড ওয়ার্নার ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার হয়ে কেউ-ই তেমন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেননি।

অস্ট্রেলিয়ার তিনজন ব্যাটসম্যান করতে পারেননি কোনো রান। আরো চারজন ছুঁতে পারেননি দুই অংকের ঘর। এই সাতজনের ব্যর্থতার পর অস্ট্রেলিয়ার আসলে প্রতিরোধ গড়ার কোনো পথই ছিলো না।

আগের চার ম্যাচের প্রথমটিতে সেঞ্চুরিয়নে অস্ট্রেলিয়ার দেয়া ২৯৫ রানের লক্ষ্য ৩৭ ওভারেই পেরিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ওই ম্যাচে কুইনটন ডি কক ১৪২ বলে ১৭৮ রানের চোখ ধাঁধানো এক ইনিংস খেলেন। পরের ম্যাচে জোহানেসবার্গে ফ্যাফ ডু প্লেসির সেঞ্চুরিতে ভর করে ৩৬১ রান করে স্বাগতিকরা। জবাব দিতে নেমে ১৪২ রানে হারতে হয় অস্ট্রেলিয়াকে।

ডারবানে অনুষ্ঠেয় তৃতীয় ম্যাচে ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভ স্মিথের সেঞ্চুরিতে ৩৭১ রানে পাহাড় গড়ে অস্ট্রেলিয়া হয়তো সিরিজে ফেরার বড় এক স্বপ্নই দেখছিলো। কিন্তু সেটাতেও হারে তারা! ৭৯ বলে ডেভিড মিলারের ১১৮ এবং ৪৯ বলে ডি ককের ৭০ রানে ভর করে ম্যাচটি জিতে নেয় প্রোটিয়ারা। ওই ম্যাচেই সিরিজ থেকে ছিটকে যায় অস্ট্রেলিয়া। পরের ম্যাচে পোর্ট অ্যালিজাবেথে কাইল অ্যাবট ও তাবরাইজ শামসির দারুণ বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়া অলআউট হয় মাত্র ১৬৭ রানে। ৮৭ বল বাকি থাকতেই ছয় উইকেট হাতে রেখে ম্যাচটি জিতে নেয় প্রোটিয়ারা।

অস্ট্রেলিয়াকে হোয়াইটওয়াশ করার পথটা পরিস্কার হয়ে যায় তখনই। এরপর শেষ ম্যাচে ডেভিড ওয়ার্নারের অসাধারণ ইনিংসটিও ভেসে গেলো জলে। অস্ট্রেলিয়া এর আগে আর কখনোই পাঁচ ম্যাচের সিরিজে এইভাবে নাকানিচুবানি খায়নি।

ওয়ানডে সিরিজের সবকটি ম্যাচ অস্ট্রেলিয়া সর্বশেষ হেরেছিলো ২০০৬-৭ মৌসুমে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। অর্থাৎ অস্ট্রেলিয়ার নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটাররা এতোদিন জানতেনই না যে, ওয়ানডে সিরিজের সব ম্যাচ অস্ট্রেলিয়া হারতে পারে!

আপনি আরো পড়তে পারেন

বাটলারের আউটে নীরব উদযাপনই করেছে বাংলাদেশ

পরিসংখ্যানে বাংলাদেশ- ইংল্যান্ড সিরিজ

মাশরাফি: শিশির না পড়লে ম্যাচের ফল অন্য রকম হতো

উৎসব নয়, চট্টগ্রামে নামলো বিষাদের রাত

এতো রান চেজ করে চট্টগ্রামে কেউ জিতেনি