ওপর দিয়ে চলে গেল ট্রেন, অলৌকিকভাবে বাঁচলেন তরুণী

ট্রেনের নিচে পড়েও অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন এক তরুণী গৃহবধূ। গতকাল শুক্রবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া বাইপাস এলাকায় তিতাস নদীর সেতুর ওপর এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার শিকার লিজা আক্তার উপজেলার বড় কুড়িপাইকা গ্রামের লিটন ভূঁইয়ার মেয়ে ও একই এলাকার জুনাইদ গাজীর স্ত্রী। এ ঘটনার ২৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে।

চলন্ত ট্রেনের নিচে লিজা

ভুক্তভোগী লিজা গণমাধ্যমকে বলেন, তিনি তার স্বামী ও ননদের সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার বরিশল গ্রামে ফুফুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে তিতাস রেল সেতু পার হচ্ছিলেন তারা। সেতুর পূর্ব প্রান্তে আসার পর তারা দেখতে পান নোয়াখালীগামী আন্তঃনগর উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন একেবারে কাছাকাছি জায়গায় এসে পড়েছে।

এ সময় তার স্বামী ও ননদ নিরাপদে অবস্থান নেন। লিজাও নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য দৌড় দিলে হোঁচট খেয়ে রেললাইনে পড়ে যান। এ সময় তিনি রেললাইনের মাঝামাঝি জায়গায় শুয়ে পড়েন। পরে ট্রেনটি তার ওপর দিয়ে চলে যায়। কিন্তু তার কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে তিনি অচেতন হয়ে পড়েছিলেন।

ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছেন লিজা

ওই সেতু এলাকায় মোবাইলে ভিডিও করছিলেন আমজাদ ভুইয়া নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, আমাদের সামনেই ঘটনাটি ঘটে। আমি আগে থেকেই ভিডিও করছিলাম। ফলে পুরো ঘটনাটি আমার ক্যামেরায় ধরা পড়ে।

ট্রেনটি চলে যাওয়ার পর সবাই মিলে মেয়েটিকে উদ্ধার করেন। তার শারীরিক কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। তখন উপস্থিত সবার সহযোগিতায় প্রথমে তার মাথায় পানি ঢালা হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।

আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হিমেল খান বলেন, লিজা নামের ওই তরুণীকে চিকিৎসার জন্য আনা হয়েছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তিনি বাড়ি চলে গেছেন। তিনি মানসিকভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত। তবে সেটাও ঠিক হয়ে যাবে।

আখাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি ফেসবুকে দেখেছি। প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন ওই তরুণী। ওই এলাকায় পথচারীদের আরো সতর্ক হয়ে পথ চলার আহবান জানান তিনি।