জ্বালানি বিভাগ: দেশে জ্বালানি তেলের মজুত পর্যাপ্ত, ঘাটতির শঙ্কা নেই

দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ জ্বালানি তেলের মজুত রয়েছে, কোনো ঘাটতি বা সঙ্কট নেই। অদূর ভবিষ্যতে সঙ্কটের কোন আশঙ্কাও নেই। আগামী ছয় মাসের জন্য প্রয়োজনীয় তেল আমদানির প্রক্রিয়া পাইপলাইনে রয়েছে। বুধবার এক বিবৃতিতে এ নিশ্চয়তা দিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

জ্বালানি বিভাগ: দেশে জ্বালানি তেলের মজুত পর্যাপ্ত, ঘাটতির শঙ্কা নেই

বিবৃতিতে দাবি করা হয়, জ্বালানি তেলের মজুদ নিয়ে স্বার্থান্বেষী একটি মহল ‘অসত্য ও মনগড়া’ তথ্য প্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। এ কারণেই মজুত জ্বালানি নিয়ে ব্যাখ্যা দিলো জ্বালানি বিভাগ।

'জ্বালানি তেল সংক্রান্ত গুজব সম্পর্কে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ব্যাখ্যা’ শীর্ষক বিবৃতিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের আওতাধীন কোম্পানিগুলোর ডিপোতে পর্যাপ্ত জ্বালানি তেল মজুত রয়েছে। বর্তমানে ডিজেল মজুত রয়েছে ৪ লাখ ৩১ হাজার ৮৩৫ মেট্রিক টন। দৈনিক গড় বিক্রি ১৩ হাজার ৬০৭ মেট্রিক টন ধরে ডিজেল মজুদ আছে আরও ৩২ দিনের। জেট-এ-১ মজুদ রয়েছে ৪৪ দিনের এবং ফার্নেস ওয়েল মজুত রয়েছে এক মাসের বেশি সময়ের।

বিবৃতিতে বলা হয়, পেট্রোল পুরোটাই বাংলাদেশ উৎপাদন করে। অকটেনের প্রায় ৪০ ভাগ দেশেই উৎপাদিত হয়।

চলতি জুলাই মাসে ৯টি জাহাজে ২ লাখ ৫৫ হাজার মে. টন ডিজেল,  দুটি জাহাজে প্রায়  ৪৩ হাজার মে. টন জেট-এ-১, একটি জাহাজ থেকে ২৪ হাজার ৬৭৭ মে. টন অকটেন এবং দুটি জাহাজ থেকে ৫৩ হাজার ৩৫৮ মে. টন ফার্ণেস ওয়েল পাওয়া গেছে। 

এছাড়া আগষ্ট মাসে ৮টি জাহাজে ২ লাখ ১৮ হাজার মে. টন ডিজেল, একটি জাহাজে ২৫ হাজার মে. টন জেট-এ-১ এবং একটি জাহাজে ২৫ হাজার মে. টন অকটেন আসবে।

অর্থাৎ, আগামী ৬ মাসের আমদানি পরিকল্পনানুসারে জ্বালানি তেল বাংলাদেশে আসবে বলে জানায় জ্বালানি বিভাগ।

বিবৃতিতে জানানো হয়,  পাইপলাইনে থাকা এসব জ্বালানির ৫০ ভাগ জি-টু-জি চুক্তির মাধ্যমে এবং বাকি ৫০ ভাগ উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ক্রয়াদেশ দেওয়া হয়েছে। তাই ঘাটতি হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।

তবে ভর্তুকি মূল্যে সরবরাহ করা জ্বালানি তেল ব্যবহারে মিতব্যয়ী ও সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে বুধবার বিকেলে ঢাকার কারওয়ান বাজার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান এবিএম আজাদ বলেন, দেশে জ্বালানি তেলের সংকট হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। আগামী ছয় মাসের আমদানি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে রাখা হয়েছে।

ইউক্রেন ও রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিশ্ববাজারে জ্বালানির উচ্চ মূল্য দেখা দিয়েছে। জ্বালানি তেলের অতি মূল্যের কারণে এ খাতে ব্যয় বাড়ছে। তাই জ্বালানি খাতে ব্যয় সাশ্রয় এবং দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাঁচাতে সম্প্রতি ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে সারাদেশেই রুটিন করে লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে।