রোহিঙ্গা নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস: কয়েকজন পুলিশ সদস্য আটক

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে সন্ত্রাসীদের হামলায় মিয়ানমারের কয়েকজন সীমান্তরক্ষী নিহত হওয়ার পর থেকে রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর অমানবিক অত্যাচার চালাচ্ছে দেশটির আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। অনলাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতনে নানা ধরনের স্থিরচিত্র এবং ভিডিও দেখে বোঝা যায়, রোহিঙ্গাদের ওপর কীভাবে চালানো হচ্ছে নির্যাতনের স্টিম রোলার। সম্প্রতি অনলাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতনের নতুন এক ভিডিও বের হয়েছে, যেটি কয়েছেন নির্যাতন চালানোর সময় পাশে থাকা এক পুলিশ সদস্য। এই ঘটনায় অভিযুক্ত কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির প্রশাসন।

২ জানুয়ারি সোমবার আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপি ভিডিও দেখে নির্যাতনের ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, রোববার রাতেই নির্যাতনের ভিডিওটি অনলাইনে প্রকাশ পায়। ঘটনার পর সোমবার সকালে মিয়ানমার সরকার ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় তদন্ত করা হবে জানিয়েছিল। ঘোষণার ১০ ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটলো। ভিডিও পর্যালোচনা করে মিয়ানমার সরকার বলছে, ভিডিওতে দেখানো নির্যাতনের দৃশ্যবলি ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে রাখাইন রাজ্যের।

দেশটির প্রশাসন জানিয়েছে, নির্যাতনের ঘটনায় যারা জড়িত তাদের প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করার পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট অভিযানে থাকা অন্য পুলিশ কর্মকর্তার ব্যাপারেও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, ৫ নভেম্বর রাখাইন রাজ্যের কোটানকাউক গ্রামে রোহিঙ্গাদের নির্মমভাবে মারধর করছে পুলিশ। জানা গেছে, মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চির কার্যালয়ের জ মিয়ো নামের এক পুলিশ কনস্টেবল এই ঘটনায় জড়িত। তার সঙ্গে আরো চারজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। জ মিয়ো নিজে সেলফি মুডে নির্যাতনের দৃশ্যটি ভিডিও করছিলেন।

সেই ভিডিওটি:

অক্টোবর মাসে সীমান্তচৌকিতে হামলার পর থেকে রোহিঙ্গাদের মুসলমানদের ওপর বিনা বিচারে হত্যা, ধর্ষণসহ সব ধরনের নির্যাতন চালানো হচ্ছে। নির্যাতনের বর্বরতায় রোহিঙ্গারা দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছে। তবে নির্যাতনের এমন ভিডিও প্রকাশের পর এই প্রথম সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলো দেশটির সরকার।