একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান ও পুর্নিবাচন দাবি করা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ‘গুচ্ছ কৌশল’ নিয়ে গুচ্ছে। বিরোধী জোটটি নির্বাচনী অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি ফলাফল প্রত্যাখ্যান করা দলগুলোকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা নিয়েছে। সেই সঙ্গে সরকারকে চাপে রাখতে আন্তর্জাতিক মহলেও প্রচারণার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে।
ঐক্যফ্রন্ট নেতারা জানান, নির্বাচনে ব্যাপক ‘কারচুপি ও ভোট ডাকাতির’ মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে আওয়ামী লীগ। এ সব ‘অনিয়মের’ বিরুদ্ধে আপাতত আইনি লড়াইয়ে নামার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ধানের শীষের প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী এজেন্টের মাধ্যমে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ জানাবেন। এরপর প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করবেন তারা।
এছাড়া ‘ভোটে সুক্ষ অনিয়মের’ চিত্র তুলে বিদেশি দেশগুলোর কূটনীতিকদের মাধ্যমে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হবে। একই সঙ্গে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের বাইরে থাকা দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাম জোট ও ইসলামী আন্দোলনকেও কাছে টানার চেষ্টা করা হবে।
ঐক্যফ্রন্ট সূত্র জানায়, নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালচনা করতে ভোটের পর দিন ৩১ ডিসেম্বর বৈঠকে বসেন শীর্ষ নেতারা। রাজধানীর মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে বৃহত্তর আন্দোলনের বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সঙ্গে এবং জেএসডির আ স ম আবদুর রবকে চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করার দায়িত্ব দেয়া হয়।
সূত্রমতে, নির্বাচনে অভিযোগের বিষয়ে মামলা করা এবং আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা আলোচনা শুরু করেছেন। খুব শিগগিরই আসনভিত্তিক মামলা করার সিদ্ধান্ত হলেও তাড়াহুড়া করে আন্দোলনে না নামার কথা ভাবা হচ্ছে।
ঐক্যফ্রন্ট নেতা নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ জানাবো, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করব। আমি চাই, অন্য প্রার্থীরা আসনভিত্তিক অভিযোগ দায়ের করবেন।’
এদিকে বৃহস্পতিবার সকল আসনে ধানের শীষের প্রার্থীদের বৈঠকে নিয়ে বৈঠক করেন বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। বিএনপি চেয়ারপার্সসের গুলশান কার্যালয়ের ওই বৈঠকে প্রার্থীরা আসনভিত্তিক নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ লিখিতভাবে জমা দেন। পরে নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি দেয়া হয়।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সিনিয়র সদস্য বলেন, ‘বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে এর আগেও নির্বাচন কমিশনে যাওয়া হয়েছে। তাতে কোনো লাভ হয়নি। ভোটের পর স্মারকলিপি দিয়েও লাভ হবে না। তাই বিকল্প কৌশল নিয়ে ভাবতে হবে।’