আপনি পড়ছেন

মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদের আর এক মাসেরও কম সময় বাকি। প্রতিবছর এই সময়টায় ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত হয়ে উঠেন পশু ব্যাপারী, খামারি ও হাটের ইজারাদাররা। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বসে পশু বিক্রির হাট। কিন্তু এ বছর নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে যেনো পাল্টে গেছে সেই চিরচেনা চিত্র। নেই কোনো বেপারী, নেই পশু বেচা-কেনার ব্যস্ততা। এমতাবস্থায় পশু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন প্রান্তিক পশু পালক ও খামারিরা।

animal market 1পশুর হাট- ফাইল ছবি

তেমনি একজন প্রান্তিক পশু পালনকারী ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কৃষক রবিউল ইসলাম। গত মঙ্গলবার উপজেলার বৈডাঙ্গা পশুর হাটে গরু বিক্রি করতে নিয়ে যান তিনি। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে এবার একটি মাত্র গরুই লালন-পালন করেছেন তিনি। আশা করেছিলেন ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি করবেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ দুই মাস সপ্তাহিক এ হাটটি বন্ধ থাকার পর পুনরায় বেচাকেনা চালু হলেও আসেনি তেমন ক্রেতা। রাজধানী থেকেও পশু কিনতে আসেনি কোনো ব্যাপারী। আর দুই একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী যারা হাটে এসেছিলেন তারা গরুটি কিনতে চেয়েছেন মাত্র ৭০ হাজার টাকায়। ফলে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হয় এ কৃষককে।

শুধু রবিউল নয়, তার মতো হতাশ হয়ে হাট থেকে বাড়ি ফিরতে হয়েছে আরো অনেক কৃষককেই। স্থানীয়রা জানান, এই হাটে পশু বিক্রি করতে আসেন ঝিনাইদহ সদর ও হরিণাকুন্ডু উপজেলা এবং চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার প্রান্তিক কৃষক ও খামারিরা। মূলত দুই ঈদ ও পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করেই তারা গরু লালন-পালন ও বিক্রি করে থাকনে। গত ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখে প্রশাসন এ হাট বসতে না দেওয়ায় এখন পশুর সংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু সেই তুলনায় ক্রেতা নেই বললেই চলে। তাই এবার কোরবানির ঈদেও গরু বিক্রি না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে খামারি ও পশু পালকদের মনে।

animal marketপশুর হাট- ফাইল ছবি

একই অবস্থা চুয়াডাঙ্গার গরু ব্যবসায়ীদেরও। জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার জাহাপুর গ্রামের খামারি মো. আউয়াল-উজ-জামান দুই পুরুষ ধরে গরু লালন-পালন ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সারা বছরের লাভ-ক্ষতি পুষিয়ে নেন কোরবানির ঈদে। এ বছরও কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ২০৭টি গরু পালন করেছেন তিনি। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে এবার এখন পর্যন্ত মাত্র দুটি গরু বিক্রি করেছেন। অথচ গত বছর ঈদে বিক্রি করেছিলেন ৭২টি গরু। এমতাবস্থায় গরু বিক্রি নিয়ে চিন্তিত তিনি।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবার দেশে ১ কোটি ৯ লাখ ৪২ হাজার ৫০০টি কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। এর মধ্যে ৪২ লাখ ৩৮ হাজার হচ্ছে গরু ও মহিষ, ৪ হাজার ৫০০টি হচ্ছে উট ও দুম্বা এবং ৬৭ লাখ হচ্ছে ছাগল ও ভেড়া। গত বছর ঈদুল আজহায় দেশে কোরবানিযোগ্য পশু ছিলো ১ কোটি ১৮ লাখ। সেই তুলনায় এবার পশুর সংখ্যা ৯ লাখ কম। কিন্তু করোনার কারণে এবার কোরবানির পশুর চাহিদাও কম। তাই ঈদে পশু সংকট দেখছেন না অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (সম্প্রসারণ) একেএম আরিফুল ইসলাম জানান, এবারের ঈদে কোরবানিযোগ্য পশুর যোগান কম হলেও তা চাহিদার তুলনায় কম হবে না। তারা করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সঠিকভাবে পশু বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য পশুর হাট বাড়ানোর জন্যও সুপারিশ করা হয়েছে।

এদিকে করোনাভাইরাসের কারণে গরুর খাদ্যের দাম গড়ে ২০ খেকে ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কয়েক দফায় বেড়েছে ভুসি, খুস, ধানের বিচালিসহ গরুর অন্যান্য খাদ্য সমাগ্রীর দাম। এমতাবস্থায় কোরবানির ঈদে সঠিক দামে গরু বিক্রি করতে না পারলে লোকসানে পড়বেন পশু পালক ও খামারিরা।

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.