মাঠপর্যায়ে যাচ্ছে জোড়া বাছুর উৎপাদন প্রযুক্তি

একটি গাভি সাধারণত বছরে একটি বাছুর জন্ম দিয়ে থাকে। এর বিকল্প হিসেবে ভ্রূণ স্থাপনের মাধ্যমে গাভির গর্ভে জোড়া বাছুর উৎপাদনে প্রযুক্তিগত সাফল্য পেয়েছেন বাংলাদেশি গবেষকরা। এ উৎপাদন প্রযুক্তির সুবিধা যে কেউ চাইলে যাতে নিতে পারে, সেজন্য মাঠপর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।

জোড়া বাছুরের প্রতিকী ছবি

জানা গেছে, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের একদল গবেষক দীর্ঘদিন ধরে ইনভারট্রো অ্যামব্রায়ো প্রডাকশন (আইভিপি) প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছেন। বছর দুই আগে এর মাধ্যমে একটি গাভি থেকে জোড়া বাছুর উৎপাদনে সফল হন তারা। গত বছরও দ্বিতীয় পরীক্ষামূলক জোড়া বাছুর উৎপাদনে সাফল্য আসে।

আইভিপি প্রযুক্তিতে দুধেল ও উচ্চ উৎপাদনশীল জাতের গাভি থেকে ডিম্বাণু সংগ্রহ করে তা ল্যাবে রেখে পরিপক্ক করা হয়। এভাবে নিষিক্তকরণ ও কালচার শেষে পরিণত করা হয় ভ্রূণে। ভ্রূণ ক্রায়োপ্রিজারভেশন প্রযুক্তির মাধ্যমে সাত দিন ল্যাবে রেখে অপেক্ষাকৃত কম দুধ দেয়া বা দুর্বল গাভির জরায়ুতে স্থাপন করা হয়। এভাবে নির্ধারিত সময়ে ভ্রূণ বেড়ে উঠায় প্রায় ১০ মাসে গাভিটি দুটি বাছুর জন্ম দেয়।

গবেষকরা জানিয়েছেন, ভ্রূণ স্থাপনের ক্ষেত্রে কিছু প্রযুক্তিগত সরঞ্জামের প্রয়োজন হয়। মাঠপর্যায়ে এর স্বল্পতা থাকলেও বর্তমানে তা অনেকটাই কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়েছে। ফলে এ প্রযুক্তি শিগগিরই মাঠপর্যায়ে সম্প্রসারণের কথা জানান তারা।

এ বিষয়ে ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাথুরাম সরকার বলেন, প্রযুক্তির মাধ্যমে জোড়া গরু উৎপাদনে পরপর দুই বছর আমরা সাফলতা পেয়েছি। এ গবেষণায় অগ্রগতি হয়েছে। আইভিপি প্রযুক্তি আমরা মাঠপর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছি।

গবেষকদের উৎপাদিত জোড়া বাছুর

জানা গেছে, ইনস্টিটিউটের নিজস্ব তহবিলে টানা চার বছর গবেষণার পর গবেষকদলটি সফল হয়। এ দলের প্রধান ড. গৌতম কুমার দেব জানান, কয়েকজন খামারিকে আগামী বছরের শুরুর দিকে আইভিপি প্রযুক্তি দেয়া হবে।

মাঠপর্যায়ে সম্প্রসারণের জন্য বিদেশ থেকে প্রযুক্তিগত বেশ কিছু যন্ত্রপাতি আনা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আইভিপি প্রযুক্তিতে জন্মানো জোড়া বাছুরগুলোর বাচ্চা জন্ম দেয়ার সময় হয়ে এসেছে। তবে এখনো ভ্রূণ স্থাপন করা হয়নি, খুব শিগগিরই সে চেষ্টাও করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, এ মন্ত্রণালয়ে নতুন আসায় এ ব্যাপারে তেমন কিছু জানি না। খোঁজ-খবর নিয়ে যা যা করা দরকার তা-ই করা হবে।