বাংলাদেশের কারাগুলোতে বর্তমানে ধারণক্ষমতার চেয়ে দ্বিগুণের বেশি বন্দি অবস্থান করছে। গত শুক্রবার থেকে পুলিশের সাঁড়াশী অভিযানের ফলে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে মানবিক বিপর্যয়ের।
বাংলাদেশে ছোটবড় মিলিয়ে মোট ৬৮টি কারাগার আছে। ৫৫টি কারাগার বিভিন্ন জেলা সদরে অবস্থিত। বাকি ১৩টি হলে কেন্দ্রীয় কারাগার। এর মধ্যে দুটি আছে হাইসিকিউরিটি কারাগার।
সরকারি হিসেব বলছে, দেশের সবগুলো কারাগারের মোট ধারণক্ষমতা ৩৪ হাজার ৭০৬ জন। কিন্তু সাঁড়াশী অভিযানের পর সবগুলো কারাগারের বর্তমান (বুধবার ১৫ জুন) বন্দির সংখ্যা ৭৫ হাজার ৪৪৪ জন। অর্থাৎ কারাগারে এখন ধারণক্ষমতার চেয়ে বন্দির ৪০ হাজার ৭৩৮ জন বেশি!
বিপুল সংখ্যক বন্দি কারাগারে মানবেতর জীবনযাপন করছে। খাওয়া- ঘুম ও শৌচকর্মের মতো প্রয়োজন মেটাতেও প্রচণ্ড কষ্ট করতে হচ্ছে বন্দিদের। কোনো কোনো কারাগারে পালাক্রমে ঘুমানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। খাবারের মান এমনিতেই খারাপ থাকে। সেটা আরো নেমে গেছে।
এই পরিস্থিতি কারাগারের কর্মকর্তা- কর্মচারিরা দুর্নীতিতে মেতে উঠেছে। অর্থের বিনিময়ে নির্দিষ্ট বন্দিদের বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে তারা। সব মিলিয়ে কারাগারে তৈরি হয়েছে তুমুল অরাজকতা।
একই চিত্র দেশের প্রতিটি কারাগারে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো মনে করছে, বেশিদিন এমন পরিস্থিতি থাকলে বড় কোনো মানবিক বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটতে পারে। তীব্র গরমে এতোগুলো মানুষ মুখোমুখি হতে পারে জীবনের সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতির।
এ ব্যাপারে প্রথমসারির একটি জাতীয় দৈনিক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, গ্রেফতার যেমন অনেকে হচ্ছে, অনেক তেমন জামিনিও ছাড়া পাচ্ছে। এভাবেই ভারসাম্য রক্ষা হচ্ছে। মানবিক বিপর্যয়ের কোনো শঙ্কা নেই।
মন্ত্রী এ কথা বললেও গ্রেফতারের তুলনায় জামিনের হার কম। অর্থাৎ প্রতিদিনই কারাগারে বন্দিদের সংখ্যা বাড়ছে এবং বাড়ছে মানবিক বিপর্যয়ের শঙ্কা।