গুলশান হামলা: খোঁজ মিলছে না হাসনাত করিমের

গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গী হামলার সময় জিম্মি এবং পরে আটক নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজা করিমের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনরা বলছেন, তাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ধরে নিয়ে গেছে। এদিকে আবার হাসনাত কোথায় আছে পুলিশ কিছুই জানে না। কেউ কেউ বলছেন, তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

গত এক জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। পরে যৌথবাহিনী 'অপারেশন থান্ডার বোল্ট' পরিচালনা করে ঘটনাস্থলের নিয়ন্ত্রণ নেয়। অভিযানের পর সেখান থেকে হাসনাত করিমসহ ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর হাসনাত করিমসহ কয়েকজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গোয়েন্দা কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

কিন্তু লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রেস মিনিষ্টার নাদিম কাদির জানান, হাসনাত করিমকে দুই-তিন সপ্তাহ আগে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আবার বিবিসির খবর অনুযায়ি, গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানান, হাসনাত করিম এখনো আটক আছেন। এমন বিপরীতমুখী এবং স্বজনদের বক্তব্যের কারণে সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজাল।

হাসনাত করিমের স্ত্রী শারমিনা পারভিন বলেন, 'গত ১৩ জুলাই আমার স্বামীর সঙ্গে শেষবার সাক্ষাত হয়। তার আগে তাকে খুব বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল, তিনি কিছুটা অসুস্থও ছিলেন।' লন্ডনে হাসনাত করিমের একজন আইনজীবী রডনি ডিক্সন বলেন, 'বাংলাদেশ সরকারের উচিত হয় হাসনাত করিমকে ছেড়ে দেয়া, নয়তো তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা। অভিযুক্তকে তার আইনজীবীর ও পরিবার পরিজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দিতে হবে। সন্ত্রাসী হামলার তদন্ত অবশ্যই সরকার করবে। যেহেতু করিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যায়নি কাজেই তাকে ছেড়ে দেওয়া উচিত।'

জানা যায়, সেই হামলার পর প্রায় অর্ধশত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন গোয়েন্দারা। রেস্টুরেন্টের ভেতর থেকে নারী, শিশু ও তিন বিদেশিসহ ১৩ জন এবং আশপাশের এলাকা থেকে আরও ১৪ জনকে উদ্ধার করে যৌথবাহিনী। পরে তাদের গোয়েন্দা হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অন্যদের ছেড়ে দেওয়া হলেও হাসনাত রেজা করিম ও তাহমিদ হাসিব ছেড়ে দেওয়া হয়নি।

ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ শাখার উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, গত ৮ জুলাই এ দু’জনকেও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে করিমের স্বজনরা বলছেন তিনি বাসায় ফেরেননি। হাসনাত করিমের বাবা রেজাউল করিম বলেন, 'হাসনাত করিম এখনো বাসায় ফেরেনি। গোয়েন্দা হেফাজতেই আছেন।'

হাসনাত করিমের স্ত্রী শারমিনা পারভিন লন্ডনের একটি পত্রিকাকে বলেছেন, 'জঙ্গীরা হাসনাত করিমকে মানব বর্ম হিসেবে ব্যবহার করেছে। পুরো পরিবার আটকে পরেছে ভেবে তারা হাসনাত করিমকে নানা কাজ করতে বাধ্য করে। তাদের সামনে সামনে হাঁটতে বলে। যাতে গুলি করলে সেই মারা যায়।'

প্রসঙ্গত, হাসনাত করিম ইংল্যান্ড এবং বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিক। লন্ডনের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি প্রকৌশল বিদ্যায় গ্রাজুয়েশন করেন। পরে লীডস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করেন। আশির দশকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। ২০০৮ সালে তিনি শিক্ষকতা থেকে সরে দাঁড়ান।

আপনি আরো পড়তে পারেন

ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি: বিপদসীমার ওপর যমুনার পানি

অর্থমন্ত্রী: সেবা পেতে হলে আরও বেশি কর দিতে হবে

তারা বাংলাদেশি, কথা বলেন হিন্দিতে!

জঙ্গিবাদবিরোধী মানবন্ধনে গিয়ে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৩

বিশ্বের সুখী দেশের তালিকায় অষ্টম স্থানে বাংলাদেশ