আপনি পড়ছেন

বেতন বাড়িয়ে জাতীয় বেতন স্কেলের ১৩তম গ্রেডে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে এক প্রকার হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কারণ নতুন স্কেল অনুযায়ী যেখানে বেতন বাড়ার কথা, সেখানে কারো কারো বেতন কমে যাচ্ছে এবং এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এক লাখের বেশি শিক্ষক। নতুন সিস্টেমে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বেতন প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকদের চেয়ে কমে যাচ্ছে। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন সিনিয়র শিক্ষকরা।

bangladesh govt logoবাংলাদেশ সরকারের লোগো

নিয়মানুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষার জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকরা আলাদা গ্রেড পেতেন। কিন্তু সরকার ১৩তম গ্রেডে বেতন স্কেল উন্নীত করার পর উঠিয়ে দিয়েছে প্রশিক্ষণ গ্রেড। ফলে নতুন নিয়মানুযায়ী অর্থাৎ ১৩তম গ্রেডে সবারই- প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণবিহীন- একই বেতন পাওয়ার কথা। মূলত জটিলতা দেখা দিয়েছে এখানেই। এ অবস্থায় সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক লাখের বেশি শিক্ষক ক্ষুব্ধ।

প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের জাতীয় বেতন স্কেলের ১৩তম গ্রেডে বেতন দেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়ে গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকেই ১৩তম গ্রেডের সুবিধাপ্রাপ্তি নিয়ে নানা জটিলতা দেখা দেয়। চিরায়ত নিয়ম অনুযায়ী নিম্ন ধাপে বেতন ফিক্সেশন করলে শিক্ষকদের বেতন কমে যাচ্ছিল। পরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব বিষয়টি নিয়ে কাজ করেন এবং ১৩তম গ্রেডের উচ্চ ধাপে বেতন ফিক্সেশন করা হয় এবং কেটে যায় জটিলতা। কিন্তু প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বেতন কমে যাওয়া নিয়ে এবার নতুন করে জটিলতা দেখা দিয়েছে।

directorate of primary educationপ্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেতন ফিক্সেশন হয়ে থাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সফটওয়ার আইবাস প্লাস প্লাসের মাধ্যমে। কিন্তু প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকদের আলাদা কোনো গ্রেড এই সফটওয়ারে নির্ধারণ করা নেই। যদিও নিয়োগবিধি অনুযায়ী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকরা প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকদের চেয়ে এক গ্রেড ওপরে বেতন পেয়ে থাকেন। কোনো শিক্ষক যেদিন প্রশিক্ষণে উত্তীর্ণ হন, সেদিন থেকে তার বেতন উচ্চতর গ্রেডে নির্ধারণ করা হয়।

চাকরিবিধির বিএসআর ৪২ (১),(২)) ধারা অনুসারে বেতন উচ্চতর গ্রেডে হলেও ধাপে না মেলায় বেতন নির্ধারণ করা হয় নিম্ন ধাপে। এতে শিক্ষকদের প্রকৃত মূল বেতন এক টাকাও না বেড়ে উল্টো কমে যায়। আর এই বেতন কমে যাওয়ার সঙ্গে রয়েছে ক্ষতিও। শিক্ষকরা বলছেন, বিদ্যমান ২০১৫ সালের পে-স্কেলের আগের পে-স্কেলগুলোতে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট হতো স্কেলভিত্তিক। ফলে মূল বেতন সাময়িকভাবে কমে গেলেও ইনক্রিমেন্টের হার বেড়ে যাওয়ায় সেটা পুষিয়ে যেত। তবে বর্তমান পে-স্কেলে মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট হয়। ফলে মূল বেতনে যিনি একবার পেছনে পড়ে যান, তার গ্রেড যত ওপরেই হোক না কেন ওই ক্ষতি আর পুষিয়ে নেওয়ার কোনো সুযোগ থাকে না। এর ফলে চিরস্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত উচ্চতর গ্রেডের শিক্ষকরা।

শিক্ষকরা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার অধিদপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষকদের প্রতিনিধিরাও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথাগুলো বুঝিয়ে বলেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত সমস্যার সমাধান হয়নি। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে নিশ্চিত কোনো সমাধানের কথাও বলা হচ্ছে না।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলছেন, এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে যদি লক্ষাধিক ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষককে উচ্চ ধাপে বেতন ফিক্সেশন এবং কমপক্ষে একটি অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হয়।

বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, পুরো বিষয়টি আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। এ নিয়ে তারা কাজ করছেন।

আমি বিষয়টি নিয়ে অর্থ সচিবের সঙ্গেও কথা বলেছি। তিনিও সমস্যাটি সমাধানের বিষয়ে কথা দিয়েছেন। কিন্তু আদেশের কাগজ তো আমার কাছে আসতে হবে। এখনো সেটা আসেনি। বাজেটের কারণে অর্থ মন্ত্রণালয় বর্তমানে অনেক ব্যস্ত। আশা করছি, আগামী ৩০ জুনের পর তারা এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করবে। শিক্ষকদের জন্য এতটুকু বলতে পারি, নতুন যে সমস্যার উদ্ভব হয়েছে, সেটি সমাধানের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করছে, বলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি।

উল্লেখ্য, সারাদেশে বর্তমানে ৬৫ হাজার ৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এসব বিদ্যালয়ে ৩ লাখ ৫২ হাজার সহকারী শিক্ষক রয়েছেন। এসব শিক্ষকের অর্ধেকই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। নতুন বেতন স্কেলে এই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকরা ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.