তথ্য জানবার অধিকার নিশ্চিত করতে এক যুগ আগে আইন করেছে সরকার। সে অনুযায়ী তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠান। এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) বেলায়ও রয়েছে ঘাটতি। আজ বৃহস্পতিবার এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
টিআইবির লোগো
‘সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বতঃপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশ চর্চার মূল্যায়ন’ এর বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে বলা হয়, দীর্ঘদিন আগে তথ্য অধিকার আইন করা হলেও এটি কার্যকরে এখনো সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত প্রচারণাসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগে ঘাটতি রয়ে গেছে।
বিদ্যমান সীমাবদ্ধতা দূর করতে ১১ দফা সুপারিশ তুলে ধরে টিআইবির সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, মিশ্র পদ্ধতিতে ১৯২টি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের ওপর তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ১৫৩টি সরকারি ও ৩৯টি এনজিও রয়েছে। ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে এসব প্রতিষ্ঠানের স্কোরিং করা হয়।
তথ্য অধিকার আইন
২০২০ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত পরিচালিত গবেষণায় তিনটি গ্রেডিংয়ে ভাগ করা হয় সব প্রতিষ্ঠানকে। এ ক্ষেত্রে ২৫টি নির্দেশকের ভিত্তিতে স্বতঃপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশ চর্চা মূল্যায়ন করা হয়। শতকরা হারে প্রতিষ্ঠানগুলোর স্কোর তৈরি করা হয় ৬৭-১০০ শতাংশ সন্তোষজনক, ৩৪-৬৬ শতাংশ অপর্যাপ্ত এবং ০-৩৩ শতাংশ উদ্বেগজনক।
এর মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় ৩৭ শতাংশ সন্তোষজনক এবং প্রায় ৮ দশমিক ৫ শতাংশ উদ্বেগজনক স্কোরে রয়েছে। এ ছাড়া প্রথম দশটি র্যাংকে রয়েছে ৬৯টি প্রতিষ্ঠান, এর মধ্যে নেই কোনো এনজিও-ই। র্যাংকিংয়ের শুরুতে (৪২ স্কোর-৮৪ শতাংশ) খাদ্য মন্ত্রণালয়, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। দ্বিতীয় র্যাংকে রয়েছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। কৃষি মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সেতু বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদ্রাসা বোর্ড, শিল্প মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অবস্থান তৃতীয় স্থানে। সর্বনিম্ন ৪ স্কোর (৮ শতাংশ) পেয়েছে আন্তঃবাহিনী নির্বাচন পরিষদ।
তথ্য অধিকার চর্চা, ফাইল ছবি
গবেষণার মানদণ্ডে কোনো এনজিও সন্তোষজনক স্কোর পায়নি, উল্টো উদ্বেজনকে রয়েছে ৯৪ দশমিক ৯ শতাংশ। এনজিওর মধ্যে প্রথম ১০-এ থাকা ১৯টি প্রতিষ্ঠানের প্রাপ্ত স্কোর ৭ থেকে ২২ এর মধ্যে। র্যাংকিংয়ের শীর্ষে রয়েছে কোস্টাল অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল ট্রান্সফরমেশন (সর্বোচ্চ ২২, ৪৪ শতাংশ)। দ্বিতীয় স্থানে ঢাকা আহছানিয়া মিশন রয়েছে। গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের অবস্থান তিন নম্বরে।
গবেষণা বলছে, ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তথ্যের প্রবেশগম্যতায় ইতিবাচক অবস্থা দেখা গেলেও অগ্রগতিটা যথেষ্ট সন্তোষজনক নয়। তথ্যব্যাপ্তি ও উপযোগিতার বেলায় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আরো কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন। ওয়েবসাইটে অনেক তথ্য প্রকাশ করা হলেও তা হালনাগাদ, ধরনের ভিত্তিতে বিন্যাস্ত, বিস্তৃতি ও তথ্যপ্রাপ্তির সহজলভ্যতায় ঘাটতি রয়েছে।