ছাত্রলীগ নেতাকে রাবি প্রক্টর, শোয়ায়ে দিতে পার না?

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সরকারবিরোধী স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করেছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের নেতাকর্মীরা। পূর্বঘোষিত এই কর্মসূচি বুধবার করতে দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রশাসন।

আন্দোলনকারীরা ও রাবির সহকারী প্রক্টর মোখলেছুর রহমান

‘নিরাপদ সড়কের দাবিতে লাশের মিছিল’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে জড়ো হয়েছিলেন সংগঠনটির মহানগর ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মীরা। তাদের হাতে বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল। সেখানে গিয়ে তাদের বাধা দেন রাবির সহকারী প্রক্টর মোখলেছুর রহমান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্ল্যাকার্ডে সরকারবিরোধী স্লোগান থাকায় সেখানে উপস্থিত থাকা ছাত্রলীগ নেতাকে মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘তোমরা কী করো, শোয়ায়ে (পিটিয়ে) দিতে পারো না?’ পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছাত্র ফেডারেশনের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত হোসেন মিলনকে অফিসে ডেকে নেন তিনি।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারীরা

পরে সংগঠনটির রাজশাহী মহানগরের আহ্বায়ক জিন্নাত আরা অভিযোগ করেন, কয়েকজনকে লক্ষ্য করে তাদের মারতে বলেছেন রাবির সহকারী প্রক্টর মোখলেছুর রহমান। এ বিষয়ে মোখলেছুর রহমান বলছেন, নির্দিষ্ট কাউকে উদ্দেশ করে কথাটি বলেননি তিনি। সরকারের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য দিলে সবার প্রতিবাদ করা উচিত।

বিজয়ের মাসে সরকার বা প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আপত্তিকর কথা মেনে নেয়া যায় না উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, সে কারণে কটূক্তিমূলক প্ল্যাকার্ড নিয়ে নেয়া হয়েছে। দ্রুত কর্মসূচি শেষ করতে বলায় তারা বাগ-বিতণ্ডায় জড়িয়েছে। তবে কাউকে মারতে বলার মতো কথা বলতে চাইনি, এটি বলা উচিতও হয়নি।

সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনায় ঢাকার নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থীর মৃত্যুর প্রতিবাদে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা, কয়েক দিন ধরে চলছে সেই আন্দোলন। নিরাপদ সড়ক এবং গণপরিবহনে ‘হাফ পাসের’ দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বুধবারও রাজধানীর মতিঝিল, শান্তিনগর, রামপুরাসহ বিভিন্ন এলাকায় চলে। ঢাকার আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের আন্দোলন দানা বাঁধে রাজধানীসহ সারা দেশে। পরে আন্দোলনের মুখে বিদ্যমান সড়ক আইন সংশোধন করতে বাধ্য হয় সরকার। যদিও সেটা কার্যকর করা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যেই গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর প্রাণ ঝরেছে সড়কে। এ কারণেই নতুন করে গতি পেয়েছে ছাত্র আন্দোলন।