আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭০তম জন্মদিন, কর্মসূচি স্থগিত

আজ ২৮ সেপ্টেম্বর বুধবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭০তম জন্মদিন। তবে বিশিষ্ট কবি ও সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের মৃত্যুতে শোকাহত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার জন্মদিন উপলেক্ষে দলীয় সকল কর্মসূচি স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের বিশেষ সহকারী (মিডিয়া) মাহবুবুল হক শাকিল জানিয়েছেন, সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথিতযশা এ কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই দেশে তার জন্মদিন উপলক্ষে দলের নেয়া সকল কর্মসূচি স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন। ফলে আজ ছাত্রলীগের আনন্দ মিছিল এবং আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা হচ্ছে না।

জানা যায়, বুধবার প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে বিকেলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা এবং সকালে ছাত্রলীগের আনন্দ মিছিলের কর্মসূচি ছিল। যুক্তরাষ্ট্র সফররত শোকাহত প্রধানমন্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফোন করে এ দুই কর্মসূচিই স্থগিত করার নির্দেশ দেন।

১৯৪৭ সালের আজকের এই দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় মেয়ে শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। শেখ হাসিনা ছাত্রজীবন থেকেই প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় এবং ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নির্বাচিত সহ সভাপতি (ভিপি) ছিলেন তিনি। ছাত্রলীগ নেত্রী হিসেবে ১১ দফা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। কারাগারে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ ও যোগাযোগের সময় তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করেন শেখ হাসিনা।

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমান যুক্তফ্রণ্ট থেকে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা ঢাকায় বসবাস শুরু করেন। ১৯৫৬ সালে শেখ হাসিনা ভর্তি হন টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে। ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। ১৯৬৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন ঢাকার বকশীবাজারের ইন্টারমিডিয়েট গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজ বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয় থেকে। তিনি ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৮ সালে পারিবারিক সিদ্ধান্তে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন শেখ হাসিনা।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টে ঘাতক চক্রের হাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার আগে শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা জার্মানিতে ছিলেন। এরপর জার্মানি থেকে তারা ভারতে এসে নির্বাসিত সময় কাটান। ১৯৮১ সালের ১৭ মে ভারত থেকে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা। তার দেশে ফেরার আগেই ওই বছরই তাকে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।

বর্তমানে তিনি তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনবার তিনি বিরোধী দলের নেতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তার ওপর অনেক মামলা, হামলাসহ কারাভোগও করতে হয়েছে।

আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন দেশের ১২টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডি-লিট উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন তিনি। ব্যস্ততার মাঝেও তিনি কিছু বই রচনা করেছেন। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সামরিকতন্ত্র বনাম গণতন্ত্র, ওরা টোকাই কেন, বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম ইত্যাদি।

শেখ হাসিনা গোটা বিশ্বের বিচক্ষণ রাষ্ট্রনায়কদের একজন। বিশ্বের শীর্ষ নেতারাও এখন শেখ হাসিনাকে দেখতে পান তাদেরই কাতারে। সহজ সারল্যে ভরা তার ব্যক্তিগত জীবন। মেধা-মনন, কঠোর পরিশ্রম, সাহস, ধৈর্য্য, দেশপ্রেম ও ত্যাগের আদর্শে গড়ে উঠেছে তার আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব।

আপনি আরো পড়তে পারেন

সার্ক সম্মেলনে যাচ্ছে না বাংলাদেশ- ভারতসহ চার দেশ

কালোবাজারে খাদ্যশস্য বিক্রি করায় দুই কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

চলে গেলেন নুরলদীনের স্রষ্টা সৈয়দ শামসুল হক

জবির মার্কেটিং বিভাগে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে গবেষণায় হরিলুট

বস্তি থেকে উদ্ধার হলো একে-২২