আপনি পড়ছেন

সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে নববধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় অনেকেই বলছেন, প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ অধ্যাপক সালেহ আহমেদ এর দায় এড়াতে পারেন না। তবে সেটি মানলেও বিদ্যমান সমাজ ব্যবস্থার আলোকে নিজের সীমাবদ্ধতা ও অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেছেন তিনি।

mc college principal saleh ahmedএমসি কলেজের অধ্যক্ষ সালেহ আহমেদ

এ ঘটনায় নানা আলোচনা-সমালোচনার মুখে থাকা অধ্যক্ষ সালেহ আহমেদ দেশের একটি জাতীয় দৈনিককে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সেখানে তিনি নিজের সীমাবদ্ধতা ও অসহায়ত্বের কথা জানিয়েছেন।

পূর্বের ঘটনার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘ছাত্রাবাস পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে, এমন ঘটনা ঘটানোর সাহস পেত না’।

২০১২ সালে ১২৮ বছরের পুরনো ছাত্রাবাস পোড়ানোর ঘটনার এক প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগ জড়িত ছিল বলেও স্বীকার করেন এমসি কলেজের অধ্যক্ষ। তবে বিভিন্ন সময় প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক বা প্রশাসনের একাংশ এদের বাঁচানোর চেষ্টা করেন, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেন- এটা মানতে নারাজ তিনি।

এবারের অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে এবং সুপারিশের প্রেক্ষিতে সনদ বাতিল করতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে যথাযথ নিয়মে আবেদন করা হবে বলে জানান অধ্যক্ষ সালেহ আহমেদ।

কিন্তু রাজনৈতিক কারণে সেই সুপারিশ বিশ্ববিদ্যালয় না মানলে, এমন ঘটনায় অভিযুক্ত হতে থাকবেন। বিষয়টি তুললে এমসি কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, আমি একজন সরকারি কর্মকর্তা. (তাদের বিষয়ে) আমরা আর কী করতে পারি? এসব ঘটনা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিষয়, অনেক কিছু বিচারিক আদালতের বিষয়, সরকারের বিষয়, সরকারি সংস্থাগুলোর বিষয়। অনেক কিছু আমাদের হাতে না।

এ বিষয়ে সাক্ষাৎকার গ্রহীতাকে উদ্দেশ করে সালেহ আহমেদ আরো বলেন, আমি আপনার প্রশ্নটি বুঝতে পেরেছি। আপনি আমার দিকটাও বেঝেন। আমার কতটা সীমাবদ্ধতা, আমি কতটা অসহায়।

নিজের অবস্থা বুঝাতে গিয়ে ২০১৯ সালের শেষ দিকে রাজশাহী সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধরে পানিতে ফেলে দেয়ার ঘটনা উল্লেখ করেন এমসি কলেজের এ অধ্যক্ষ। পত্র-পত্রিকা বা টিভিতে সাংবাদিকদের মাধ্যমে সেই খবর দেখেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের অবস্থাটা বোঝার চেষ্টা করেন।

বিদ্যমান সমাজে এভাবে নিজের অবস্থা তুলে ধরলেও এমসি কলেজে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ার প্রত্যাশা করেন অধ্যক্ষ সালেহ আহমেদ। এ ক্ষেত্রে তার পক্ষ থেকে যতটুকু করার, তা করবেন বলেও জানান তিনি।