আপনি পড়ছেন

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় আরো এক বাংলাদেশি প্রবাসীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে সেখানে মোট চারজন প্রবাসী বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০০ জন।

beirut explosion 02 1লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ

বুধবার রাতে তথ্যটি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ দূতাবাসের হেড অফ চ্যান্সরি আবদুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, নতুন করে আরো একজন বাংলাদেশি মারা গেছেন। এ নিয়ে বিস্ফোরণে চার বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেল।

নতুন যিনি মারা গেছেন তিনি হলেন- কুমিল্লা জেলার মাধবপুরের মনির সিকদারের ছেলে রেজাউল। নিহত বাকি তিন জন হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা জাজিশার মুসেদ মিয়ার ছেলে রাসেল মিয়া ও মেহেদী হাসান এবং মাদারীপুরের মিজানুর রহমান।

এ ছাড়া বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১০০ জন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রবাসী কর্মী ৭৯ জন এবং অন্য ২১ জন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্য। এর মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।

beirut explosion 3লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ

আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বিস্ফোরণটি যে জায়গায় হয়েছে তার আশপাশে অনুমানিক ৩-৪ হাজার বাংলাদেশি বসবাস করেন। তাই আর কেউ হতাহত হয়েছে কি না সে বিষয়ে দূতাবাস খোঁজখবর নিচ্ছে।

এর আগে তিনি জানিয়েছিলেন, এ বিস্ফোরণের ঘটনায় দেশটিতে অবস্থান করা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২১ জন সদস্য আহত হয়েছেন। পাশাপাশি বৈরুত বন্দরে অবস্থান করা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ বিএনএস বিজয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৬ জনকে বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। এছাড়া বাকি ১৫ জন সামরিক সদস্যকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

লেবাননে ২৫ বছর ধরে কাজ করা বাবু সাহা নামের এক বাংলাদেশি শ্রমিক জানান, নিহত মেহেদী হাসানের বাড়ি বাহ্মণবাড়িয়ার বাদেশ্বরা গ্রামে। তিনি বৈরুতের আশরাফি এলাকার একটি সুপার মার্কেটে কাজ করতেন। বর্তমানে তার মরদেহ মাউন্ট লেবাননে রয়েছে। আর নিহত মিজানের বাড়ি মাদারীপুরে। তিনি ঘটনাস্থলের এক কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করতেন।

beirut explosion 4লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ

এদিকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, বিস্ফোরণের ঘটনায় মোট মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ১০০ জন ছাড়িয়ে গেছে। আহত হয়েছেন ৪ হাজারের বেশি। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেকে আটকে থাকায় হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা রেডক্রসের লেবানিজ শাখার প্রধান জর্জ কিত্তানেহ।

স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ জোড়া বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতই বেশি ছিলো যে সেখানে ৩ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর তীব্রতা টের পাওয়া যায় বৈরুত শহর থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে ভূমধ্যসাগরের অপর প্রান্তে অবস্থিত সাইপ্রাসেও। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ঘটনাস্থল থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের স্থাপনাও। বিস্ফোরণের পর শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা যায়।