হাতে বিয়ের চুড়ি, নাকে নথ, কানে ঝুমকো আর গায়ে জমকালো শাড়ি। মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে এগুলো পরেই গত ৩০ বছর ধরে নববধূর সাজে জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি। মৃত স্ত্রীর 'প্রতিশোধের' হাত থেকে বাঁচতে অদ্ভূত এ কাণ্ডটি করেছেন উত্তর প্রদেশের জৈনপুর জেলার হজখাস গ্রামের বাসিন্দা চিন্তাহরণ চৌহান।

marraige picপ্রতীকী ছবি

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস জানায়, মাত্র ১৪ বছর বয়সে প্রথম বিয়ে করেন চিন্তাহরণ নামের ওই ব্যক্তি। বিয়ের কয়েক মাস পরে মারা যান তার স্ত্রী। এরপর নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য গৃহ ত্যাগ করেন তিনি। কাজের খোঁজে ঘুরে বেড়ান বিভিন্ন জেলায়।

ঘুরতে ঘুরতে পশ্চিমবঙ্গের দিনাজপুরে এসে এক ইটভাটায় কাজ শুরু করেন চিন্তাহরণ। তখন তিনি ২১ বছরের যুবক। সেখানেই ঘনিষ্ঠতার সূত্রে বিয়ে করেন এক দোকানদারের মেয়েকে। তবে পরিবারের আপত্তি থাকায় দ্বিতীয় স্ত্রীকে বাপের বাড়ি রেখেই উত্তর প্রদেশের নিজের বাড়িতে ফিরে যান চিন্তাহরণ।

এদিকে স্বামীর ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ ও বিচ্ছেদের দুঃখ সইতে না পেরে পরপারে পাড়ি জমান তার দ্বিতীয় স্ত্রী। বিচ্ছেদের এক বছর পর দিনাজপুরে ফিরে এসে একথা জানতে পারেন চিন্তহরণ। তারপর ফের বিয়ে করেন তিনি। কিন্তু তৃতীয় বিয়ের পরেই ভয়াবহ দুর্যোগ নেমে আসে তার জীবনে।

৬৬ বছর বয়সী চিন্তাহরণ বলেন, তৃতীয় বিয়ের পর পরই তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হতে থাকেন। একে একে মারা যেতে থাকেন সবাই। কয়েকদিনে মধ্যেই বাবা, বড়ভাই, তার স্ত্রী, তাদের সন্তান এবং ছোটভাইসহ মোট ১৪ জন মারা যান। এতে প্রচণ্ড মৃত্যুভয় চেপে ধরে তাকে।

তার বিশ্বাস, 'বিশ্বাসঘাতকতার' কারণেই তার দ্বিতীয় স্ত্রী প্রতিশোধ নিতে পরিবারের লোকজনকে মেরে ফেলছে। তিনি বলেন, একদিন ঘুমের মধ্যে তার মৃত বাঙালী স্ত্রী স্বপ্নে আসে এবং তার 'বিশ্বাসঘাতকতার' জন্য কাঁদতে থাকে। তখন তিনি তার মৃত স্ত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিজের এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জীবন ভিক্ষা চান। তখন তার তার স্ত্রী এক শর্তেই তাকে জীবন ভিক্ষা দিতে রাজি হন।

চিন্তাহরণ বলেন, তার মৃত স্ত্রী স্বপ্নে তাকে শর্ত দেন, বাকি জীবন শাড়ি-চুড়ি পরে নববধূর সাজে কাটিয়ে দিতে পারলেই মৃত্যুর হাত থেকে মুক্তি পাবে সে। স্ত্রীর এ শর্তে সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যান তিনি। এরপর থেকেই বিয়ের পোশাক পরা শুরু করেন ভারতের এ বাসিন্দা। এর ফলে তার পরিবারের সদস্যদেরও মৃত্যুর ঘটনা বন্ধ হয়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, কনের বেশে তিনি শুধু মৃত্যুকেই পরাজিত করেননি, এতে তার শরীর-স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটেছে। তার পরিবারের সদস্যরাও স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পেরেছে। বর্তমানে রমেশ ও দীনেশ নামের তার দুই ছেলে রয়েছে এবং অনেকদিন আগে তার তৃতীয় স্ত্রী স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করেছে।

তার এমন অস্বাভাবিক জীবন-যাপনে নিয়ে প্রতিবেশিদের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে চিন্তাহরণ বলেন, শুরুতে যখন তিনি নববধূর পোশাক পরিধান শুরু করেন, তখন প্রতিবেশিরা তাকে নিয়ে ঠাট্টা, হাসি-তামাশা করতো। তবে ধীরে ধীরে তা বন্ধ হয়ে যায়। এখন তারা সকলে চিন্তাহরণকে ভালোবাসে।

Discover extraordinary stories from around the world with our exceptional news coverage. From uplifting human interest stories to groundbreaking scientific discoveries, we bring you the best of the best. Stay informed about the latest breakthroughs in technology, medicine, and beyond, and explore the world's most fascinating cultures and communities. Get inspired and informed with our exceptional news coverage.