আপনি পড়ছেন

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যারা জানে আর যারা জানে না, তারা কী সমান হতে পারে?’ আল-জুমু'আ, আয়াত- ৯। যারা জানে, কোরআনের পরিভাষায় তাদেরকে বলা হয় আলেম। প্রতিটি ধর্মেই আলেম তথা জ্ঞানীদের মর্যাদা দেয়া হয়েছে। ইসলাম ধর্মেও আলেমদের মর্যাদা সবার উপরে।

alem

এ বিষয়ে পবিত্র হাদিস শরীফে অসংখ্য বর্ণনা এসেছে। একটি হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আবেদের অপেক্ষা আলেমের মর্যাদা তেমন, যেমন তোমাদের সর্বাপেক্ষা ছোট ব্যক্তির তুলনায় আমার মর্যাদা!’ তিরমিজি শরিফ।

আরেকটি হাদিসে রাসুলপাক (সা.) বলেছেন, ‘আলেমের জন্য সৃষ্টিজগতের সব কিছুই মাগফিরাত বা ক্ষমা প্রার্থনা করে। এমনকি সমুদ্রের মাছ পর্যন্ত।’ সহিহ জামে আস সগির ও কানযুল উম্মাল।

একজন আলেমের সবচেয়ে বড় মর্যাদা হল, সে নূরনবী (সা.) এর ওয়ারিশ। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আলেমরা নবীদের উত্তরাধিকারী, আর নবীরা দিরহাম বা দিনার অর্থাৎ বৈষয়িক কোনো সম্পদের উত্তরাধিকার রেখে যাননি। তাঁরা উত্তরাধিকার হিসেবে রেখে গেছেন ইলম তথা জ্ঞান। অতএব যে ব্যক্তি ইলম অর্জন করেছে, আলেম হয়েছে, সে অনেক অনেক বেশি মুনাফা লাভ করেছে।’ সুনানে আবু দাউদ।

উপমহাদেশের প্রখ্যাত হাদিস বিশারদ এবং আধ্যাত্মিক রাহবার শাহ আবদুল হক মোহাদ্দেস দেহলভী (রহ.) বলেন, কেউ যদি খাঁটি আলেমের হাতে তাওবা করে বায়াত হয়, সে আসলে হুজুর (সা.) এর রুহানি হাতেই তাওবা করে বায়াত হল। প্রতিটি হক্কানি আলেমের সঙ্গে হুজুর (সা.) এর একটি রুহানি সম্পর্ক রয়েছে। যে কারণে আলেমদের কথা-কাজ হুজুর (সা.) এরই কথা-কাজের অনুরূপ।

জগতে একজন আলেমের মর্যাদা বোঝাতে গিয়ে রাসুল (সা.) সুন্দর একটি উদাহরণ দিয়েছেন। বায়হাকি শরিফে এসেছে, ‘পৃথিবীতে আলেমের অবস্থান আসমানের তারকারাজির মত। যখন মানুষ তারা দেখতে পায়, তখন সে পথ চলতে পারে। যখন তারকা দেখা যায় না, তখন মানুষজন অন্ধকারে পথ হাতরাতে থাকে ’ বায়হাকি শরিফ।

এ হাদিসের ব্যাখ্যায় প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিসগণ বলেন, আলেমকে দেখে দেখে, আলেমের কথা শুনে শুনে যতদিন জগতবাসী তাদের জীবন পরিচালনা করবে। ততদিন তারা পথ হারাবে না। যখনই আলেমদের পরামর্শ ছাড়া মানুষ জীবনযাপন শুরু করবে, তখনই তারা জীবনের মহাসড়ক থেকে ছিটকে পড়বে। অন্ধকারে গলিপথে হারিয়ে যাবে। তাই আলেমদেরকে আকাশের তারার সঙ্গে তুলনা করেছেন নবীজি (সা.)।

একজন আলেম মারা গেলেও তার সওয়াবের খাতা বন্ধ হয় না। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মানুষ যখন মারা যায়, তখন তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায়। তবে তিনটি উৎস থেকে তা জারি থাকে। ১. সাদাকায়ে জারিয়া ২. উপকারী এলম ৩. নেক সন্তান যে তার জন্য দোয়া করে।’ সহিহ মুসলিম।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর