আপনি পড়ছেন

প্রতিটি মানুষের মাঝেই আলাদা আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সে যেই হোক না কেনো। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমরেরও (রা.) এমন কিছু বৈশিষ্ট্য ছিল, যা ওনাকে অন্য সবার থেকে আলাদা করেছে। আর তা হচ্ছে- অসাধারণ সাহসিকতা এবং সত্য বলার দৃঢ় মানসিকতা। ওমরের (রা.) ব্যক্তিত্বে আরও এমন কিছু বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে যা অন্যান্য সাহাবির মধ্যে পাওয়া যায় না। চলুন তাহলে জেনে নিই ওমরের (রা.) দশটি ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে। 

islam 3প্রতীকী ছবি

১. ওমর (রা.) কে দেখলে শয়তান পালিয়ে যেত

বুখারি ও মুসলিম শরিফে সাদ বিন আবু ওয়াক্কাস (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘হে ওমর! আল্লাহর শপথ! তোমাকে পথে দেখলে শয়তান পালিয়ে যায়।’

তিরমিজি শরিফে হযরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘ওমরকে দেখে শয়তানকে পালিয়ে যেতে দেখেছি।’

২. আকাশের ফেরেশতারা ওমরকে সম্মান করে

ইবনে আসাকির হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসুল (স.) বলেছেন, ওমররের অন্যতম মর্যদা হলো- আকাশের সব ফেরেশতা তাকে সম্মান করে আর জমিনের সব শয়তান তাকে ভয় পায়।

মুসনাদের আহমাদে হযরত বুরাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (স.) বলেন, ‘হে ওমর! শয়তান তোমাকে ভয় পায়। আর ফেরেশতারা তোমাকে সম্মান করে।’

৩. ওমরকে নিয়ে আল্লাহ গর্ব করেন

বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম তাবারানি আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘আল্লাহতায়ালা আরাফার হাজীদের নিয়ে ফেরেশতাদের সামনে গর্ব করেন। এটা হলো সাধারণ গর্ব। আর ওমরকে নিয়ে ফেরেশতাদের সামনে বিশেষ গর্ব করেন।’

৪. ওমরের মাঝে নবী হওয়ার যোগ্যতা ছিল

ইমাম তিরমিজি উকবা বিন আমর (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুল (স.) বলেন, ‘আমার পরে কেউ যদি নবী হত, সে সম্মান আল্লাহ ওমরকে দান করতেন। তার ভেতর নবীসুলভ যোগ্যতা এবং দূরদৃষ্টি রয়েছে।’

৫. ওমরের সিদ্ধান্তের পক্ষে অনেক আয়াত নাজিল হয়েছে

ইমাম তিরমিজি ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘ওমর এক সিদ্ধান্ত নিতেন আর অন্যান্য সাহাবিরা ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতেন- এমনটি হলে ওমরের সিদ্ধান্তের পক্ষে আয়াত নাজিল হয়ে যেত।’

শহিদে মেহরাব গ্রন্থের লেখক ওমর (রা.) এর ওপর ব্যপক গবেষণা করে দেখিয়েছেন, প্রায় সতেরটি আয়াত ওমর (রা.) এর সিদ্ধান্তের পক্ষে নাজিল হয়েছে। জালালুদ্দিন সুয়ুতি একুশটি আয়াতের কথা উল্লেখ করেছেন।

৬. ভেতরে-বাইরে নিরেট সত্যবাদী

তিরমিজি শরিফে ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘ওমর এমন একজন মানুষ যার ভেতরে আর বাইরে কোনো পার্থক্য নেই। সে মুখে যে সত্য উচ্চারণ করে, অন্তরেও সে সত্য লালন করে।’

৭. জান্নাতিদের জন্য উজ্জল প্রদীপ

মুসনাদে বাজ্জারে ইমাম বাজ্জার (রহ.) ইবনে ওমর থেকে বর্ণনা করেন, রাসুল (স.) বলেছেন, ওমর হলো জান্নাতীদের জন্য প্রদীপের মত।

৮. ওমরকে নিয়ে নবীজির (স.) ভবিষ্যতবাণী

উসমান ইবনে মাজউন (রা.) থেকে ইমাম বাজ্জার বর্ণনা করেন, রাসুল (স.) ওমরের দিকে ইশারা করে বলেন, ‘যতদিন ওমর তোমাদের মাঝে থাকবে ততদিন ফেতনা মাথাচারা দিয়ে উঠতে পারবে না। ওমর যখন থাকবে না তখন চতুর্দিক থেকে তোমাদের মাঝে ফেতনা দেখা যাবে।’

৯. ওমরের রাগ মুসলমানদের বিজয়ের কারণ

ইমাম তাবারানি তার আওসাতে ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘জিবরাইল এসে আমাকে জানিয়েছে যে, স্বয়ং আল্লাহ ওমরকে সালাম জানিয়েছেন। আর আল্লাহ তায়ালা এটাও বলেছেন, ওমরের রাগ মুসলমানদের বিজয়ের কারণ।’

১০. সত্য ওমরের সঙ্গে থাকে

ইমাম দাইলামী ফজল বিন আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘ওমর এমন একজন মানুষ- সে যেখানে থাকে, সত্যও সেখানে থাকে।’

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর