আপনি পড়ছেন

পবিত্র কোরআনে সুরা রোমের ২২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, আর আল্লাহর কুদরতের মধ্যে অন্যতম হলো তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। নিশ্চয়ই জ্ঞানীদের জন্য এতে অনেক বড় নিদর্শন রয়েছে।’

vasa 2

মুফাসসিরগণ বলেছেন, মাতৃভাষা মহান আল্লাহর কাছে সীমাহীন মর্যাদার। প্রতিটি ভাষাই যে আল্লাহর অনুপম সৃষ্টি নৈপুণ্য প্রকাশ করে, উপরোক্ত আয়াত তার অন্যতম প্রমাণ। তাফসিরে ফি জিলালিল কোরআনে বলা হয়েছে, মানুষ মাতৃভাষায় যেভাবে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে, অন্য কোনো ভাষায় তা পারে না। ফলে দোয়া এবং প্রার্থনায় মাতৃভাষায় মহান আল্লাহর কাছে হৃদয়ের আকুতি প্রকাশ করা উত্তম।

মাতৃভাষার মর্যাদা সম্পর্কে কোরআনের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ আয়াতটি হলো সুরা ইবরাহিমের ৪ নম্বর আয়াত। আল্লাহ বলেন, আমি সব রাসুলকে (সা.) তাদের স্বজাতির ভাষাভাষী করে পাঠিয়েছি, যাতে করে তারা আমার বাণী উম্মতের কাছে সহজ ভাষায় উপস্থাপন করতে পারে।

পৃথিবীতে যত নবী রাসুল (সা.) এসেছেন, তারা সবাই স্বজাতির ভাষায় ওহি নিয়ে এসেছেন। সব আসমানি কিতাব স্বজাতির ভাষায় নাজিল হয়েছে। সৈয়দ মুজতবা আলী লিখেন, পবিত্র কোরআন নাজিলের সময় আরবদের কাছে পবিত্র ভাষা হিসেবে পরিচিত ছিলো হিব্রু ভাষা। এর আগে আরবি ভাষায় আর কোনো আসমানি কিতাব নাজিল না হওয়ার কারণে আরবের ধর্মীয় ব্যক্তিদের কাছে আরবি ভাষা ছিলো ‘অচ্ছুত’।

language

যখন আরবি ভাষায় রাসুল (সা.) এর ওপর কোরআন নাজিল হলো, তখন আরবের ধর্মীয় পণ্ডিতরা বলাবলি করতে শুরু করল, এমন এক ‘অপবিত্র’ ভাষায় আল্লাহ তার কালাম নাজিল করবেন কেন? নিশ্চয় মুহাম্মাদ (সা.) মিথ্যা নবুয়াতি দাবি করছে।’

এ ধরনের আপত্তির জবাবে আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি এ কোরআন তোমাদের মাতৃভাষা আরবিতে নাজিল করেছি, যাতে তোমরা সহজেই এর আয়াতগুলো সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করতে পারো।’ (সূরা ইউসুফ: ২)।

দুঃখজনক হলেও সত্য, উপমহাদেশের মুসলমানদের মধ্যে বিশেষ করে বাংলাদেশের মুসলমানরা আজও মাতৃভাষার মর্যাদা বুঝতে পারেননি। ইসমাইল হোসেন সিরাজী আজ থেকে একশ বছর আগে লিখেছেন, যতদিন পর্যন্ত এ দেশের মুসলমানরা মাতৃভাষাকে খাটো করে দেখবে ততদিন পর্যন্ত তারা ধর্মীয় ও জাগতির জীবনে উন্নতির দেখা পাবে না।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর