আপনি পড়ছেন

সদা চঞ্চল, উচ্ছ্বল। কথা শুরু করলে যেন থামতেই চাইত না, অথচ তা বিরক্তিকর নয় বরং সবাইকে মুগ্ধ করে রাখতো। আর তার হাসির কথা কী বলব! প্রথম দেখাতেই যে কেউ মুগ্ধ না হয়ে পারতেন না। প্রিয় পাঠক, এতক্ষণ যার কথা বলছিলাম তিনি হলেন- সজীব চন্দ। টোয়েন্টিফোর লাইভ নিউজপেপারে কর্মরত ছিলেন তিনি। 

sajib chanda 24

আপনারা যখন এই সংবাদটি পড়ছেন ততোক্ষণে ক্ষণজন্মা স্নিগ্ধ হাসির এই ছেলেটির শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে মেধাবী এই সাংবাদিক, লেখক, আলোকচিত্রীসহ বহুগুণ সম্পন্ন সজীব পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে আত্মহত্যা করেছেন। 

সজীব বাবা-মাকে নিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান সংলগ্ন এক ভাড়াবাসায় বসবাস করতেন। স্থায়ী নিবাস নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার সিরাজপুর ইউনিয়নের শাহজাদপুর গ্রাম। শনিবার বিকালের দিকে আত্মীয়-স্বজনের উপস্থিতিতে সেখানেই সজীবের শেষকৃত সম্পন্ন হয়। সজীবের এই অকাল মৃত্যুতে তার কর্মস্থল, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্র শোকের ছায়া নেমেছে।

সজীবের বাবা জীবন কুমার, একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা। তিনি নিজেও দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছেন। মা আকুল রানীর একমাত্র আদরের ধন সজীব। পড়াশোনার গণ্ডি পেরুতে না পেরুতেই কোনো এক ঝড়ে জীবনযুদ্ধে হেরে গেল সম্ভাবনাময় একটি জীবন।

সজীব রাজধানীর ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে (ইউল্যাব) মিডিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজমের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

নিহতের চাচাতো ভাই সুব্রত চন্দ বলেন, 'সজীব দীর্ঘদিন থেকে মানসিক হতাশায় ভুগছিল। মানসিক চাপ সইতে না পেরেই সে আত্মহননের পথ বেছে নেয়।' গলায় ফাঁস দিয়ে সজীব নিজেকে শেষ করেন বলে জানান তিনি।

sajib deskএই ডেস্কে বসেই কাজ করতেন সজীব। এটি তার খুব পছন্দের জায়গা...

তিনি বলেন, 'শুক্রবার আনুমানিক রাত ২টার দিকে নিজ রুমে সিলিং ফ্যানে গামছা দিয়ে আত্মহত্যা করেন সজীব। বিষয়টি সর্বপ্রথম বুঝতে পারেন সজীবের মা। তিনি প্রতিদিনের মতো সজীব ঘুমিয়েছে কি না বা ঠাণ্ডা লাগছে কি না তা দেখতে গিয়ে নিজের সন্তানকে ঝুলন্ত অবস্থায় আবিষ্কার করেন। পরে তাকে নিকটস্থ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তাররা মৃত ঘোষণা করেন।' 

পেশাগত জীবনে সজীব ছিলেন টোয়েন্টিফোর লাইভ নিউজপেপারের 'প্রাণ'। অফিসের সকলের সঙ্গে তার ছিল বন্ধুসুলভ সম্পর্ক। কাজের প্রতি সজীবের যেমন ছিল একাগ্রতা তেমনি অফিসেও ছিলেন অত্যন্ত প্রাণবন্ত। চটপটে প্রাণোচ্ছ্বল আর মেধাবী এই তরুণ সংবাদকর্মীর অকাল প্রস্থানে শোকাহত টোয়েন্টিফোর লাইভ নিউজপেপার পরিবার।