ঈদে সড়কে বড় ডাকাতির প্রস্তুতি, চক্র আটক

শহিদুল ইসলাম পেশায় ছিলেন একজন সাধারণ রিকশাচালক। সেই তিনি এখন ডাকাতচক্রের মূলহোতা ও সর্দার। তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়। রংপুর ও ঢাকার আশপাশে বহু ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছেন শহিদুল। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি, ডাকাতির প্রস্তুতি, ধর্ষণসহ ৬টি মামলা রয়েছে।

ডাকাতচক্রকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব

পবিত্র ঈদ উল আযহাকে কেন্দ্র করে মহাসড়কে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানার ঝাঁজর এলাকা থেকে আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের ৯ জন সক্রিয় সদস্যকে দেশি-বিদেশি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১। গতকাল ৪ জুলাইয়ের এই অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১ এর আভিযানিক দল।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. শহিদুল ইসলাম (৩৪), মো. আয়নাল মিয়া ওরফে আয়নাল হক (৩৯), মো. আন্ডু মিয়া (৫৭), মো. আজিজুল ইসলাম ওরফে আইনুল (৩২), উজ্জল চন্দ্র মহন্ত (২৭), মো. শাহিন ওরফে সজিব (৩৩), মো. শহিদ (৩৮), মো. রনি সরকার (২৪) এবং মো. আব্দুল হাকিম ওরফে আব্দুল গাটু মিয়া (৪০)।

এ সময় ডাকাতদের নিকট থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, একটি ম্যাগাজিন, ২ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ২টি ওয়ান শুটার গানের গুলি, ২টি ছোরা, একটি রামদা, একটি দা, ৫টি গামছা, একটি রশি, একটি করাত, ২টি টর্চ লাইট, একটি বস্তা,  ১১টি মোবাইল ফোন এবং নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সক্রিয় সদস্য। এই চক্রের সদস্য সংখ্যা আনুমানিক ১০-১২ জন। চক্রের সর্দার শহিদুল ইসলাম। তার অন্যতম সহযোগী আন্ডু মিয়া ও আয়নাল মিয়া, যারা ডাকাতির পরিকল্পনা এবং অন্যান্য ডাকাতদের সংঘবদ্ধ করে থাকে।

বিগত ৫ বছর একই সাথে সংঘবদ্ধ হয়ে রংপুর ও গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করে আসছিল তারা। প্রথমে চুরি ও ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত থাকলেও গত কয়েক বছর ডাকাতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে পড়ে।

র‍্যাব আরও জানায়, চক্রটি প্রতিমাসে ২/৩ বার সংঘঠিত হয়ে প্রথমদিকে রংপুর ও পরবর্তীতে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকার সড়ক ও মহাসড়কে ডাকাতি করে। কৌশল হিসেবে তারা সড়কের নির্জন স্থানে রাতের আঁধারে গাছ কেটে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করত। পরবর্তীতে ইজিবাইক, অটোরিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেল, পিকআপসহ ছোট আকারের যানবাহনকে টার্গেট করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতি করত।

আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে মহাসড়কে বড় আকারে ডাকাতি করার জন্য গাজীপুর জেলার গাছা থানাধীন ঝাঁজর এলাকায় সংঘঠিত হয়েছিল। 

র‍্যাব-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার নোমান আহমেদ জানান, গ্রেপ্তারকৃত আয়নাল মিয়া ডাকাত সর্দারের অন্যতম সহযোগী। ডাকাতি করার জন্য গাজীপুরের গাছা থানাধীন ঝাঁজর এলাকায় একটি অস্থায়ী আবাসস্থল ঠিক করেছিলেন তিনি। আইনালের বিরুদ্ধে চুরি ও ডাকাতিসহ ৪টি মামলা রয়েছে।

আন্ডু মিয়াও ডাকাত সর্দারের অন্যতম সহযোগী এবং পরামর্শদাতা। সে ১৯৯৫ সাল থেকে চুরি-ডাকাতির সাথে জড়িত। তার বিরুদ্ধে হত্যা ও ডাকাতিসহ ৪টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার শহিদ ডাকাত চক্রের সাথে গত ৩ বছর ধরে জড়িত। সে পেশায় রিকশাচালক হলেও এলাকায় কুখ্যাত চোর হিসাবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা এবং চুরিসহ ১২টি মামলা রয়েছে।

এছাড়াও ডাকাত চক্রের সদস্য শাহিনের বিরুদ্ধে ২টি, উজ্জলের বিরুদ্ধে ২টি, আজিজুলের বিরুদ্ধে একটি, আব্দুল হাকিম এবং রনি সরকারের বিরুদ্ধে একটি করে মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে র‍্যাব।