রাজধানীতে করোনাভাইরাসের উপ-ধরন বিএ.৫ এর দাপট

কয়েকদিন ধরেই পুরো দেশে বিশেষ করে ঢাকায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অনেকখানি বেড়ে গেছে। গবেষকরা এর পেছনে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপ-ধরন বিএ.৫ এর প্রভাব দেখতে পেয়েছেন। সংক্রমণের মাত্রা বিপজ্জনক হলেও এতে আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুর হার খুবই কম।

করোনা পরীক্ষা চলছে

আইসিডিডিআর,বির গবেষকরা বলছেন, গত দেড় মাস ধরে ওমিক্রনের এই উপ-ধরনটি ঢাকায় প্রাধান্য বিস্তার করছে। ধরনটি অতিমাত্রায় সংক্রামক বলে চিহ্নিত হয়েছে। তবে এতে আক্রান্তদের তেমন হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে না। মৃত্যুর হারও কম।

২০২০ সালে ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী চিহ্নিত হয়। এরপর সংক্রমণের হার উঠানামার মধ্যে দিয়ে গত বছর একেবারেই কমে আসে। তবে বিশ্বজুড়ে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়লে তার প্রভাবে গত বছরের মাঝামাঝিতে সংক্রমণ বেড়ে যায়। যদিও এ ভ্যারিয়েন্টটি বাংলাদেশে তেমন প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। বছররের শেষদিকে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমতে থাকে এবং মৃত্যু শূন্যের কোটায় নেমে আসে।

দেশে আবারো করোনা সংক্রমণ বাড়ছে

তবে গত কয়েকদিনে আবারো করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় এটিকে দেশের করোনা মহামারির ‘চতুর্থ ঢেউ’ বলা হচ্ছে।

এর মধ্যে ওমিক্রনের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট বা উপ-ধরনে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের কথা জানান যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।

গতকাল মঙ্গলবার আইসিডিডিআর,বির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনার প্রকোপ ঠিক সেভাবে উপলব্ধি করা না গেলেও বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে বিএ.১ উপ-ধরনের প্রাধান্য ছিল। এরপর প্রাধান্য বিস্তার করে বিএ.২ উপ-ধরন, যেটি চলে এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। এরপর করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ও শনাক্তের হার কমে যাওয়ায় ভ্যারিয়েন্ট সিকোয়েন্সিং করা প্রায় ৪০ দিন বন্ধ ছিল।

আইসিডিডিআর,বি জানিয়েছে, গত ১৯ মে আবার ঢাকায় ওমিক্রনের উপ-ধরন বিএ.৫ এ আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়। এরপর থেকে গত ছয় সপ্তাহ ধরে বিএ.৫ প্রভাব বিস্তার করছে। এই সময়ের মধ্যে ৫২ জন করোনা আক্রান্ত রোগীর জেনোম সিকোয়েন্স করে ৫১টিতেই পাওয়া গেছে বিএ.৫ উপ-ধরন। বিএ.২ পাওয়া গেছে মাত্র একজনের ক্ষেত্রে।

বিএ.৫ উপ-ধরনে সংক্রমিত ৪০ জন রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তাদের ৩৯ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের মৃদু উপসর্গ আছে, একজনের কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি। এই ৪০ জনের মধ্যে মাত্র একজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে করোনা আক্রান্ত প্রথম কোনো ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে সাতটা পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১৯ লাখ ৮২ হাজার ৯৭২ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৯ হাজার ২৭৩ জন। মারা গেছেন ২৯ হাজার ১৮১ জন।