আনোয়ার ইব্রাহিম: রাশিয়া-ইউক্রেন চুক্তি কূটনৈতিক অভ্যুত্থান

ইউক্রেনের কৃষ্ণ সাগরের তিনটি বন্দর দিয়ে শস্য রপ্তানি ইস্যুতে রাশিয়া-ইউক্রেনের চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার অন্যতম শীর্ষ রাজনীতিবিদ আনোয়ার ইব্রাহিম। এ সময় তিনি এ চুক্তির নেপথ্যে থাকা তুরস্কের ভূয়সী প্রশংসা করেন। খবর আনাদোলু।

আনোয়ার ইব্রাহিম

আনাদোলু এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গত শুক্রবার স্বাক্ষরিত চুক্তির কথা উল্লেখ করে মালয়েশিয়ার পার্লামেন্টে বর্তমান বিরোধী নেতা আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, এটি একটি বড় কূটনৈতিক অভ্যুত্থান। চারদিকে যখন হতাশা ও নেতিবাচক খবরে ভরপুর, তখন এটি একটি অসাধারণ গল্প। এ চুক্তির পেছনে কাজ করার জন্য তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান, তুরস্কের প্রশাসন ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান।

এরদোয়ানের কথা উল্লেখ করে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, খাদ্য নিরাপত্তার একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানে এরদোয়ান ইউক্রেন ও রাশিয়াকে একত্রিত করতে সক্ষম হয়েছেন। এটি একটি বড় কূটনৈতিক বিজয়। যদিও যুদ্ধ এখনও চলছে, তারপরও দুই পক্ষের জন্য এটি ছিল মুখোমুখি হওয়ার, দেখা করার একটি সুযোগ।

দুই দেশের চুক্তি সই

তিনি আরও বলেন, খাদ্যের দাম বৃদ্ধি এবং খাদ্য নিরাপত্তার সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে এটি একটি বড় কূটনৈতিক সাফল্য।

গত শুক্রবার রাতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের উপস্থিতিতে রাশিয়া ও ইউক্রেন একটি শস্য চুক্তিতে সই করে। এর ফলে ইউক্রেন বিপুল পরিমাণ শস্য রপ্তানি করতে পারবে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা আশা করছেন, এর ফলে বিশ্বজুড়ে যে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা কিছুটা হলেও লাঘব হবে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে ইব্রাহিম বলেন, শস্য চুক্তিটি ইঙ্গিত দেয়, অন্তত টানেলের শেষে আলো আছে। অবশ্য ইউক্রেন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই চুক্তির বাইরে রাশিয়ার সাথে আর কোনো ধরনের চুক্তিতে তারা সই করবে না।

এরদোয়ানকে নিজের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বন্ধু অভিহিত করে তিনি বলেন, তুরস্ক সম্ভবত একমাত্র দেশ, যারা যুদ্ধরত দুই পক্ষকে খাদ্যশস্য রপ্তানির মতো অন্তত কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে একত্রিত করতে সক্ষম হয়েছে। আমরা গর্বিত, আমাদের একটি উদীয়মান মধ্যপন্থী মুসলিম জাতি (তুর্কি) সেই ভূমিকা পালন করছে।

জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুসারে, ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এ রুশ অভিযানে ইউক্রেনে পাঁচ হাজারের বেশি বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। ১৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। যার মধ্যে সাড়ে নয় মিলিয়নেরও বেশি মানুষ অন্যান্য দেশে পালিয়ে গেছে।