পাঞ্জাব পুনরুদ্ধার করলেন ইমরান

নাটকীয়তার মধ্যে হারিয়েছেন প্রধানমন্ত্রিত্ব। তিন মাস পর পাঞ্জাবের উপনির্বাচনে বড় জয় পায় পিটিআই প্রধান ইমরান খানের দল। কিন্তু রাজনীতির মারপ্যাচে হারিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাকে। বিষয়টি চলে যায় সুপ্রিম কোর্টে। আইনি লড়াইয়ে আবারও বিজয়ের মুখ দেখলেন ইমরান খান। তিন বিচারকের বেঞ্চ ঘোষণা করে পিটিআইয়ের চৌধুরী পারভেজ এলাহিই পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী। খবর এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

হামজাকে পেছনে ফেলে মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন পিটিআইয়ের চৌধুরী পারভেজ এলাহি

পাঞ্জাব প্রদেশের উপনির্বাচনে বিপুল জয় পেয়েছিল ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। স্বাভাবিকভাবেই মনে করা হচ্ছিল পিটিআইয়ের চৌধুরী পারভেজ ইলাহি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। কিন্তু আইনসভার ডেপুটি স্পিকারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। দেশের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের ছেলে হামজা শাহবাজ শরিফকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচন করা হয়।

পরিস্থিতি পাল্টে যায় মঙ্গলবার রাতে। ডেপুটি স্পিকারের সেই বিতর্কিত সিদ্ধান্তকে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করেন পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল, বিচারপতি ইজাজ-উল-আহসান এবং বিচারপতি মুনিব আখতারের সমন্বয়ে গঠিত পাক সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ শুনানির পর রায়ে জানায়, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) হামজা শাহবাজ শরিফ নন, এ আসনে বসবেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চৌধুরী পারভেজ এলাহি।

সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারকের বেঞ্চ

শুধু তাই নয়, মঙ্গলবার রাতের মধ্যেই এলাহির শপথের ব্যবস্থা করার জন্য পাঞ্জাবের গভর্নরকে নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ এক্ষেত্রে প্রয়োজনে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভিকেও হস্তক্ষেপ করার ‘পরামর্শ’ দিয়েছেন।

৩৭১ সদস্যের পাঞ্জাব প্রাদেশিক আইনসভায় গত শুক্রবার ভোট গ্রহণ করা হয়। তাতে হামজা শাহবাজ শরিফ পেয়েছিলেন ১৭৯টি ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী পিটিআই নেতা এলাহি পেয়েছিলেন ১৮৬টি। স্বাভাবিকভাবেই এলাহির মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আইনসভার ডেপুটি স্পিকার দোস্ত মাজারি এলাহির পক্ষে থাকা পাকিস্তান মুসলিম লিগ কায়েদ-ই-আজমের (পিএমএল-কিউ) ১০ সদস্যের ভোট বাতিল করে দেন। ফলে তিন ভোটে বিজয়ী হন হামজা শরিফ। পরবর্তীতে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে টেনে নিয়ে যায় ইমরানের দল।

পাঞ্জাব প্রদেশের আইনসভার ২০টি আসনের সাম্প্রতিক উপনির্বাচনে ১৫টিতেই ইমরানের দল পিটিআই জয় পায়। পাক পাঞ্জাবের শাসকদল পিএমএল(এন) জেতে মাত্র চারটি আসনে।

নির্বাচনের এ ফলে পাঞ্জাব আইনসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ফিরে পায় পিটিআই। এ অবস্থায় পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলির অধিবেশন ডেকে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে নতুন করে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনের নির্দেশ দেন লাহোর হাই কোর্ট। তারপরই ভোটাভুটি ও ডেপুটি স্পিকারের নাটক। অতঃপর সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ ও ইমরান খানের মুখে হাসি।

মাঠের লড়াইয়ে এমন পরিস্থিতিতে অনেকবার পড়তে হয়েছে ইমরান খানকে। কিন্তু রাজনীতিতে পাওয়া চমক খেলার মাঠের চমককেও পেছনে ফেলে দিচ্ছে।