ইরাক ও সিরিয়ায় তুর্কি সামরিক স্থাপনায় হামলা

ইরাক ও সিরিয়ায় তুরস্কের কয়েকটি সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে রকেট হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত ২৪ ঘন্টায় এসব হামলা হয়েছে। একই সময়ে দুই দেশের কর্মকর্তারা তাদের দেশে তুরস্কের সামরিক উপস্থিতির বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় বক্তব্য রেখেছেন।

ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুয়াদ হুসেইন তার দেশ থেকে তুরস্কের সৈন্য প্রত্যাহার করতে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাশের আহ্বান জানিয়েছেন

ইরানের ফারস বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, ইরাকের মসুল শহরে তুরস্কের কনস্যুলেট লক্ষ্য করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রকেট হামলা হয়েছে। কমপক্ষে দুটি রকেট কনস্যুলেটের সীমানার কাছে গিয়ে পড়েছে। এতে কোনো হতাহত হয়নি। তবে কনস্যুলেটের বাইরে রাখা তুর্কি ঠিকাদার ও দোভাষীদের কয়েকটি গাড়ি ধ্বংস হয়েছে।

মসুল পুলিশের একটি সূত্র পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে সিনহুয়াকে বলেছে, তুর্কি কনস্যুলেট লক্ষ্য করে ছয়টি রকেট নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে কনস্যুলেটের কাছে অবস্থিত কয়েকটি ভবনের ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে আবাবিল ব্রিগেড নামে ইরানি সমর্থনপুষ্ট একটি ক্ষুদ্র মিলিশিয়া গ্রুপ উত্তর ইরাকে তুর্কি সামরিক ঘাঁটিতে হামলার কথা জানিয়েছে। নিজেদের ওয়েবসাইটে দেওয়া বিবৃতিতে গ্রুপটি হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে বলেছে, ইরাকের মাটিতে তুর্কি দখলদারিত্বের অবসান না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ অব্যাহত থাকবে। তুর্কি ঘাঁটিতে মুরাদ-৬ ড্রোন হামলা চালানো হয় বলে গ্রুপটি জানিয়েছে। পর্যবেক্ষকরা ওই ড্রোনকে ইরানের শাহেদ-১৪ ড্রোনের স্থানীয় সংস্করণ বলে মন্তব্য করেছেন।

পৃথক ঘটনায় সিরিয়ার আলেপ্পো শহরের কাছে খিলজিবরিন এলাকায় তুর্কি সামরিক বাহিনীর ঘাঁটিতে রকেট ও গোলাবর্ষণ করা হয়েছে। তাল রিফাত শহরেও তুর্কি সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা হয়েছে। তুর্কি সমর্থনপুষ্ট সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মির কর্মকর্তারা হামলার জন্য কুর্দি মিলিশিয়াদের দায়ী করেছেন।

তুর্কি সংবাদমাধ্যম এনি সিফাক জানিয়েছে, সিরিয়ার আফরিন শহরে মরিয়ম সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) গোলাবর্ষণ করেছে।

এদিকে ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুয়াদ হুসেইন তার দেশে তুরস্কের সামরিক উপস্থিতির বিরুদ্ধে জনমত গঠন করতে নিউইয়র্ক সফরে গেছেন। মঙ্গলবার রাতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা ইরাকি ভূখণ্ডে তুরস্কের বেআইনি সামরিক উপস্থিতি প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা অবিলম্বে ইরাক থেকে তুর্কি সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। তুরস্ককে ইরাক থেকে সৈন্য প্রত্যাহারে বাধ্য করতে আমরা নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাশের আহ্বান জানাই।

পৃথক ঘটনায় সিরিয়ায় সেনা অভিযানের বিষয়ে তুরস্ককে সতর্ক করে একটি বিবৃতি দিয়েছে সিরিয়ার সেনাবাহিনী। তুরস্কের সম্ভাব্য আক্রমণের বিরুদ্ধে সিরিয়ার সেনাবাহিনী নিজেদের দেশের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

প্রসঙ্গত, সিরিয়ার সেনাবাহিনী সেদেশে তুরস্কের সামরিক তৎপরতার বিষয়ে সচরাচর বক্তব্য দেয় না। এর আগে ২০১৯ সালে তুরস্কের বসন্তকালীন অভিযানের আগে সিরিয়ার সেনাবাহিনী এমন বিবৃতি দিয়েছিল।