আপনি পড়ছেন

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি এশিয়ার পথে যাত্রা শুরু করেছেন। তার এ সফরকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে রীতিমতো যুদ্ধাবস্থা দেখা দিয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে মার্কিন ও চীনা যুদ্ধজাহাজ। সফরকালে পেলোসি তাইওয়ান যেতে চাইলে তার বিমান ভূপাতিত করার আভাস দিয়েছে চীন। এমন পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধের শামিল হবে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা।

uss reagan twsd পেলোসির সফরকালে দক্ষিণ চীন সাগরে অবস্থান করবে মার্কিন রণতরী ইউএসএস রোনাল্ড রিগ্যান

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্ড্রুজ বিমান ঘাঁটি থেকে ন্যান্সি পেলোসিকে বহনকারী সামরিক বিমান প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পথে যাত্রা শুরু করেছে। পেলোসির এশিয়া সফর শুরুর মূহূর্তে হঠাৎ করে তাইওয়ান প্রণালীতে সামরিক মহড়ার ঘোষণা দিয়েছে চীন। তাইওয়ানের সবচেয়ে কাছে অবস্থিত ফুজিয়ান প্রদেশে আজ সকালে লাইভ ফায়ার মহড়া শুরু করেছে পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)।

এক বিবৃতিতে পিএলএ বলেছে, পূর্ব চীনের ফুজিয়ান প্রদেশে লাইভ ফায়ার মহড়া অনুষ্ঠিত হবে এবং ফুঝৌ শহর ও পিংতানের কাছাকাছি সমুদ্র এলাকা শনিবার সকাল আটটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

এর আগে শুক্রবার রাতে ওয়েইবোতে আপলোডকৃত কিছু ভিডিওতে হাইস্পিড ট্রেনে ট্যাঙ্ক, কামান, সাঁজোয়া যান, অ্যামফিবিয়াস ল্যান্ডিং কার ও অন্যান্য ভারী অস্ত্রশস্ত্র পরিবহন করতে দেখা যায়। পিএলএর ইস্টার্ন কমান্ড এসব অস্ত্র ঝেজিয়াং প্রদেশের হাংঝৌ থেকে ফুজিয়ানে স্থানান্তর করে বলে ইউজাররা জানান।

জানা গেছে, পিংতান, জিয়ামেনসহ ফুজিয়ানের কয়েকটি উপকূলীয় শহরে ভারি অস্ত্র ও সৈন্য সমাবেশ করেছে চীন। এর মধ্যে পিংতান থেকে তাইপের দূরত্ব ১২৫ কিলোমিটার। জিয়ামেন থেকে তাইওয়ান-নিয়ন্ত্রিত কিনমেন দ্বীপের দূরত্ব ২৪ কিলোমিটার।

এদিকে ফুজিয়ান প্রদেশের বিপরীত দিকে তাইওয়ানে এন্টি-অ্যামফিবিয়াস মহড়া শুরু করেছে সেখানকার সশস্ত্র বাহিনী। চীনা সৈন্যরা সাগরপথে এসে তাইওয়ানে অবতরণ করলে সেটা ঠেকাতে এই মহড়ার নাম দেওয়া হয়েছে হুয়ান কুয়াং।

এর আগে শুক্রবার পিএলএ’র এইটিয়েথ আর্মির অফিসিয়াল ওয়েইবো অ্যাকাউন্টে ‘যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হবার সময়’ (টাইম টু প্রিপেয়ার ফর ওয়ার) লিখে পোস্ট করা হয়। কয়েক ঘণ্টায় তিন লাখের বেশি লাইক ও ১৮ হাজার কমেন্ট পড়ে ওই পোস্টে।

মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এশিয়া সফরকালে ন্যান্সি পেলোসি জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর যাবেন। এছাড়া তিনি তাইওয়ান সফরের সম্ভাবনাও উম্মুক্ত রেখেছেন। এ বিষয়ে সিএনএন’র প্রতিবেদক জশ রগিনের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, সফরসূচি সংক্রান্ত তথ্য হচ্ছে গোপনীয় বিষয়। নিরাপত্তাজনিত কারণে তা প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, পেলোসির এশিয়া সফরকালে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস রোনাল্ড রিগ্যান ও তার সঙ্গে থাকা সপ্তম নৌবহরের ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপের যুদ্ধজাহাজগুলো দক্ষিণ চীন সাগরে অবস্থান থাকবে। এসব যুদ্ধজাহাজ সিঙ্গাপুরের চ্যাঙ্গি নৌ ঘাঁটি থেকে যাত্রা করে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ চীন সাগরে পৌঁছেছে।

স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা গেছে, দক্ষিণ চীন সাগরে ইউএসএস রোনাল্ড রিগ্যানের কাছাকাছি অবস্থান নিয়েছে চীনের কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে পিএলএ-এর একটি ওয়াই-বি এএসডব্লিউ পেট্রল বিমান তাইওয়ানের বিমান প্রতিরক্ষা এলাকার দক্ষিণাংশে দেখা গেছে।

রাশিয়া ও চীনের সামরিক ব্লগাররা বলছেন, তাইওয়ানের আশেপাশে কোনো মার্কিন সাবমেরিন রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে পিএলএ ওই বিমান পাঠিয়েছে।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এ উত্তেজনার পারদ আরও চড়িয়ে দিচ্ছেন দুই দেশের ভাষ্যকার ও রাজনীতিকরা। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ব সংবাদমাধ্যম গ্লোবল টাইমসের ভাষ্যকার হু জিজিন বলেছেন, ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান যেতে চাইলে চীন তাকে বহনকারী বিমান ঠেকাতে জঙ্গিবিমান পাঠাবে। প্রথমে সতর্কতামূলক গুলি ছোঁড়া হবে এবং পথ বদলাতে বলা হবে। এরপরও ওই বিমান সামনে এগোলে ভূপাতিত করা হবে।

হু জিজিনের বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মার্কিন সিনেটর মার্শা ব্ল্যাকবার্ন বলেছেন, ‘চীনের সরকারি প্রচারমাধ্যম আভাস দিয়েছে যে পেলোসি তাইওয়ান যেতে চাইলে তার বিমান ভূপাতিত করা হবে। এটা হবে সরাসরি যুদ্ধের শামিল। যুক্তরাষ্ট্র কোনো মাস্তান দেশের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক চাপকে পাত্তা দেয় না।

মার্শা ব্ল্যাকবার্ন ও সমমনা আইনপওণেতারা চীনের সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘাতে তাইওয়ানকে ধার হিসেবে অস্ত্র সরবরাহের জন্য মার্কিন কংগ্রেসে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। প্রস্তাবের পক্ষে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় দলের আইনপ্রণেতাদের সমর্থন রয়েছে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.