সাগরতলে জাহাজ-প্লেনের ধ্বংসাবশেষ খুঁজবে রোবট!

সাগরতলে কত জাহাজ বছরের পর বছর ধরে ডুবে পড়ে আছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই। কখনো আবার সাগরতলে হারিয়ে গেছে দুর্ঘটনার শিকার প্লেন। অনেক সময় মানুষ সেই ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেলেও বেশিরভাগ সময়ই হদিসই মেলে না।

সাগরতলে জাহাজ কিংবা প্লেনের ধ্বংসাবশেষ খুঁজবে এই রোবট

মানুষের এই অপারগতায় সাগরতলে নামবে এবার রোবট। এমনই রোবট তৈরি করেছেন ক্যালিফোর্নিয়ার স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। রোবটটির নাম দেওয়া হয়েছে ওশ্যনওয়ানকে। এ যেন এক মানবিক ডুবুরি।

এখন থেকে সাগরের অতলে নেমে ডুবে যাওয়া জাহাজ কিংবা প্লেনের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করা বা উদ্ধার করে নিয়ে আসার কাজে ব্যবহৃত হবে ওশ্যনওয়ানকে রোবট। অগাধ পানির তলায় নেমে রোবটটি নিয়ে আসবে সাগরতলের রঙিন ছবি।

রোবটটি সামনে থেকে দেখতে অনেকটা মানুষের মতোই। মানুষের মতো দুটি হাত ও চোখ রয়েছে। চোখের ক্ষমতা তার থ্রিডি। এই থ্রিডি চোখই তুলে আনবে সাগরতলের রঙিন ছবি। রোবটটির পেছনের অংশে রয়েছে কম্পিউটার। আর সেখানে রয়েছে আট বহুমাত্রিক থ্রাস্টার। এগুলোর মাধ্যমেই জাহাজের ধ্বংসস্তুপে সাবধানে চলাচল করবে রোবট।

গবেষকরা স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিং পুলে রোবটটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন।

শুধু সুইমিংপুলেই নয়, এরইমধ্যে ভূমধ্যসাগরের তলদেশেও নেমেছে রোবট ডুবুরি। দেখে এসেছে ভূমধ্যসাগরের ১৬৪০ ফুট নিচে পড়ে থাকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে ডুবে যাওয়া ইতালির জাহাজ লি ফ্রান্সিসকো ক্রিসপি। ১৯৪৩ সালের ১৯ এপ্রিল ব্রিটিশ সাবমেরিন টর্পেডোর আঘাতে ক্রিসপি ডুবে প্রাণ হারান ৯৪৩ সেনা।

গবেষকরা জানান, সমুদ্রের ওপরে বসে যিনি সাগরতলের ডুবুরি রোবট পরিচালনা করবেন, তিনি অনুভব করবেন, সাগরের তলায় যেন রয়েছেন নিজেই। রোবটের দেখা ও স্পর্শের বিষয়গুলোও নিজেই অনুভব করবেন ওই অপারেটর। তবে পানির তলার যে চাপ, সেটি অনুভব করবেন না।

ডুবুরি রোবট তৈরি টিমের প্রধান স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ও রোবটিক্স স্কুলের পরিচালক ওসামা খাতিব বলেন, এই রোবটের মাধ্যমে মনে হবে আপনিই সাগরতলে শত শত বছর ধরে পড়ে থাকা ধ্বংসস্তুপের ভেতরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তিনি বলেন, ভূমধ্যসাগরে রোবটটি নামানোর পর মনে হয়েছে ৫০০ মিটার পানির তলায় থাকা ক্রিসপি জাহাজ ছুঁয়ে দেখেছি আমিই।