শীতে আসার আগেই কাঁপছে জার্মানরা!

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউরোপের যেসব দেশ বিপাকে পড়েছে তার শীর্ষে রয়েছে জার্মানি। জীবনযাত্রার বর্ধিত ব্যয়ের সাথে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে লড়াই করছে দেশটির নাগরিকরা। এরমধ্যে দেশটির সরকার জ্বালানি খাতের ওপর যে শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে, তাতে অনেকেই চোখে অন্ধকার দেখছেন। খবর আনাদোলু।

অনেক জার্মান নাগরিকই জ্বালানির খরচ বহন করতে পারবেন না

জার্মান টেন্যান্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লুকাস সিবেনকোটেন গতকাল সোমবার সতর্ক করে বলেছেন, লক্ষ লক্ষ জার্মান এই শীতে জ্বালানির খরচ বহন করতে সক্ষম হবে না।

ডের ট্যাগেসপিগেল দৈনিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করবে। তারা এরইমধ্যে জীবনযাত্রার বর্ধিত ব্যয়ের সাথে মানিয়ে নিতে লড়াই করছে।

গ্যাজপ্রমের একটি গ্যাস লাইন

তিনি বলেন, আমরা এখানে লক্ষ লক্ষ মানুষের কথা বলছি, গ্যাসের গ্রাহকদের ওপর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত জীবনযাত্রার খরচ আরও অনেকটা বাড়িয়ে দেবে।

ভবিষ্যতের ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমরা এখনও জানি না পুতিন শেষপর্যন্ত কতটা গ্যাস সরবরাহ করবেন এবং গ্যাসের দাম আরও কতটা বাড়বে। সরকার অক্টোবরে গ্যাসে শুল্ক চালু করার পরিকল্পনা করছে। এর ফলে প্রতিটি পরিবারে প্রায় এক হাজার ইউরোর মতো অতিরিক্ত খরচ যুক্ত হবে।

উল্লেখ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৪০ শতাংশ গ্যাস আসে রাশিয়া থেকে। গত সপ্তাহে রাশিয়া নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইনের সরবরাহ ২৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। যার প্রভাব পড়েছে পুরো ইউরোপে। ফলে আসন্ন শীতকালের সংকট মোকাবেলায় এখন থেকেই ইউরোপের দেশগুলো স্বেচ্ছায় ১৫ শতাংশ গ্যাসের ব্যবহার কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে।

গত এক বছরে ইউরোপে গ্যাসের দাম ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ৩৭ ইউরো থেকে বেড়ে বর্তমানে ২০৫ ইউরোতে ঠেকেছে প্রতি মেগাওয়াট ঘণ্টা গ্যাসের দাম। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে জার্মানি। ইউরোপের সর্ববৃহৎ অর্থনীতির এ দেশটিতে প্রায় ৬০ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ করে রাশিয়া।

গ্যাসের সরবরাহ কমতে থাকায় জার্মানিতে বিকল্প হিসেবে তেলের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে জ্বালানি তেলের দামও বেড়ে গেছে। গত বছরের তুলনায় দেশটিতে তেলের দাম দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।