বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, ৫ খুনি আজও অধরা
- Details
- by নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্যের হাতে শহীদ হন। ঘাতকরা ধানমণ্ডির বাসভবনে ঢুকে শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, সেদিন প্রাণ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুপরিবারের ১৭ সদস্যসহ মোট ২০ জন। ইতিহাসের সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ৪৭তম বার্ষিকী আজ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
এত বছর পরও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সবার শাস্তি কার্যকর হয়নি, এখনও অধরা পাঁচ জন। ইতোমধ্যে ছয় খুনির ফাঁসির রায় কার্যকর হলেও বিদেশে পালিয়ে থাকা পাঁচ খুনিকে সম্ভব হয়নি দেশে ফিরিয়ে আনা। এমনকি পাঁচজনের মধ্যে দুজনের অবস্থান জানা গেলেও অন্য তিনজনের হদিশ মেলেনি। একজন পলাতক অবস্থায় মারা গেছেন বিদেশেই।
আত্মগোপনে থাকা পাঁচ খুনি হলেন- শরীফুল হক ডালিম, মোসলেম উদ্দিন, আব্দুর রশীদ, রাশেদ চৌধুরী ও নূর চৌধুরী।
খুনিরা কে কোথায়
জানা গেছে, আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে এবং নূর চৌধুরী কানাডায় অবস্থান করছেন। দেশ দুটি মানবাধিকারের দোহাই দিয়ে আশ্রয় দিয়েছে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের। তাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ বিভিন্ন সময়ে আবেদন জানালেও দেশ দুটির কাছ থেকে তেমন সাড়া মেলেনি। পলাতক অবস্থায় ২০০২ সালে জিম্বাবুয়েতে মারা গেছেন ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আরেক আসামি আজিজ পাশা।
অন্যদিকে আব্দুর রশীদ, শরীফুল হক ডালিম ও মোসলেম উদ্দিন কোথায় আছেন, সেই খোঁজ পাওয়া যায়নি এখনো। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই সরকারের কাছে। এক সময় ধারণা করা হতো, মোসলেম উদ্দিন ভারতে রয়েছেন। বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দেশটি জানিয়েছে, মোসলেম উদ্দিন সেখানে নেই।
এছাড়া ধারণা করা হচ্ছে, ফ্রান্স, লিবিয়া, পোলান্ড, থাইল্যান্ড বা ইংল্যান্ড যে কোনো একটি দেশে থাকতে পারে আব্দুর রশিদ। আর শরীফুল হক ডালিম চীন, হংকং, কেনিয়া বা থাইল্যান্ড থাকতে পারেন। এসব দেশে বারবার চিঠি পাঠানো হলেও খুনিদের অবস্থান নিশ্চিত করতে পারেনি কেউ। তারা বেঁচে আছেন কি-না, তাও নিশ্চিত নয়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেই ঘাতকরা বসে থাকেনি। পরবর্তীতে এ ঘটনায় মামলা হলেও হত্যার যেন বিচার না হয়, সেজন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। তবে ঘটনার ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর মামলার বিচারকাজ পুনরায় শুরু হয়। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ১২ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়। তাদের মধ্যে ছয় জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
ফাঁসি কার্যকর হয়েছে যাদের
২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি আসামি সৈয়দ ফারুক রহমান, বজলুল হুদা, এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান ও মহিউদ্দিন আহমেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালের ১২ এপ্রিল বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। প্রায় ২৪ বছর ভারতে লুকিয়ে ছিলেন খুনি আব্দুল মাজেদ।
খুনিদের শাস্তি কার্যকর করতে সচেষ্ট সরকার
বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের বিষয়ে ২০০৯ সাল থেকে পুলিশের আর্ন্তজাতিক সংস্থা ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারি করা রয়েছে। ৫ বছর পরপর নোটিশ নবায়ন করা হলেও আাসামিদের সর্বশেষ অবস্থান জানা যায়নি।
অবশ্য খুনিদের দেশে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে আনতে আইনগত সব ধরনের প্রচেষ্টা চলছে। সম্ভাব্য দেশগুলোতে চিঠি দেওয়া হচ্ছে খুনিদের ফিরিয়ে আনতে।
এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের খুনের দায়ে যারা সর্বোচ্চ আদালত থেকে সাজাপ্রাপ্ত, যাদের ব্যাপারে এখনও এই রায় কার্যকর করা যায়নি, কারণ তারা পলাতক। তাদের ফিরিয়ে এনে এই রায় কার্যকর করার ব্যাপারে সরকার বদ্ধপরিকর।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.