যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টায় সফল হবেন এরদোয়ান!

ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে গত ২২ জুলাই শস্য চুক্তি এবং তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ানের সফলতা প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্বনেতাদের মধ্যে তিনিই এ ব্যাপারে সবচেয়ে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার তুর্কি প্রেসিডেন্ট ইউক্রেন সফর করছেন। তার ‘শাটল কুটনীতি’র লক্ষ্য হল রাশিয়া ও ইউক্রেনকে একটি যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানো। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান

খবরে বলা হচ্ছে, এরদোয়ান রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী হিসাবে আবির্ভূত হয়েছেন। মূলত যুদ্ধ পরিস্থিতি থামাতে তিনি ইউক্রেন সফর করছেন। তুর্কি প্রেসিডেন্টের লক্ষ্য থাকবে ইউক্রেনের প্রতি একটি নতুন কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি, যাতে পরিস্থিতি যুদ্ধবিরতির দিকে যায়।

ইউক্রেন সফরে এরদোগান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সাথে লভিভে বৈঠক করবেন। এই বৈঠকে তিনি রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটাতে একটি যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা চালাবেন। বৈঠকের আলোচ্যসূচির শীর্ষে থাকবে শস্য চুক্তির পরিধি প্রসারিত করার প্রচেষ্টা।

উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাশিয়ান এবং ইউরেশিয়ান স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক গ্রেগরি সিমন্স বলেছেন, শস্য চুক্তি ইউক্রেনীয় এবং রাশিয়ান উভয়ের জন্য পথ প্রশস্ত করেছিল। আর এরদোয়ানের এই সফরের লক্ষ্য হতে পারে কূটনৈতিক সাফল্যের বিকাশ এবং সম্প্রসারণ করা। এর মাধ্যমে তিনি যুদ্ধবিরতি পর্যন্ত পৌঁছতে চান।

সিমন্স বিশ্বাস করেন, এরদোয়ানের ইউক্রেন সফরের লক্ষ্য মস্কোর সাথে একটি যুদ্ধবিরতি আলোচনার জন্য কিয়েভকে রাজি করানো। শস্য চুক্তির ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা সম্পর্কের মাধ্যমে তিনি যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা করবেন। আমি মনে করি, একজন সৎ মধ্যস্থতাকারী হিসাবে এরদোয়ানের প্রচেষ্টা সফল হবে।

এর আগে গত ৫ আগস্ট এরদোয়ান রাশিয়ার কৃষ্ণসাগর বন্দর সোচিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে দেখা করেন। যেখানে তারা ইউক্রেন এবং সিরিয়ার সংঘাত নিয়ে আলোচনা করেন। এরদোয়ান শাটল কূটনীতির মাধ্যমে রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয়ের সাথে সুসম্পর্ক সৃষ্টির বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

নিউলাইনস ইনস্টিটিউটের সিনিয়র বিশ্লেষক ইউজিন চৌসোভস্কি বলেন, দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে তুরস্ক একটি প্রধান সুইং প্লেয়ার হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। এরদোয়ান বহুমুখী কৌশল ব্যবহার করছেন। শস্য চুক্তি ইতোমধ্যে অর্থপূর্ণ ফলাফল নিয়ে এসেছে।

চৌসোভস্কি মনে করেন, ইউক্রেন সংঘাতের বিষয়ে তুরস্কের দৃষ্টিভঙ্গি সাধারণ পশ্চিমা পদ্ধতির চেয়ে অনেক বেশি অর্থবহ। আঙ্কারার ‘প্রোঅ্যাকটিভ পন্থা’ রাশিয়ার সাথে যেভাবে সবচেয়ে কার্যকরভাবে মোকাবেলা করছে, তা থেকে পশ্চিমা বিশ্ব শিক্ষা নিতে পারে।