শাহবাজ গিলকে হাসপাতালে স্থানান্তরের আদেশ

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের চিফ অব স্টাফ ও পিটিআই নেতা শাহবাজ গিলকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাকিস্তান ইনস্টিটিউট মেডিক্যাল সায়েন্সেসে (পিমস) স্থানান্তরের আদেশ দিয়েছেন ইসলামাবাদের জেলা ও দায়রা জজ আদালত। একইসঙ্গে আদালত রিমান্ডের জন্য গিলকে পুলিশের কাছে হস্তান্তরের আদেশ সোমবার পর্যন্ত মুলতবি করেছে।

ইমরান খানের সঙ্গে শাহবাজ গিল ফাইল ছবি

এর আগে বুধবার আদালত শাহবাজ গিলের দুই দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করে। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ওইদিন সন্ধ্যায় তাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

শাহবাজ গিলকে রিমান্ডে শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান। আজ এক টুইটে তিনি লেখেন- এ পর্যন্ত পাওয়া সবকটি ছবি ও ভিডিওতে স্পষ্ট বুঝা যায় শাহবাজ গিলকে শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। তার মনোবল ভাঙার জন্য চরম রকমের অপদস্থ করা হয়েছে। আমার কাছে বিস্তারিত তথ্য আছে।

তিনি আরও লেখেন- আইসিটি পুলিশ বলেছে তারা কোনো নির্যাতন করেনি। কারা নির্যাতন চালাতে পারে তার একটি ধারণা জনমানসে এবং আমাদের মনেও রয়েছে। জনগণ জবাব দেবে। দায়ী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে ও বিচারের আওতায় আনতে আমরা সবকিছু করব।

আজ দুপুরে শাহবাজ গিলকে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট রাজা ফররুখ আলী খানের আদালতে হাজির করা হয়। এর আগে তাকে পিমস থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আদালতে নেওয়া হয়।

পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী সেদেশের ক্ষমতাসীন দুর্নীতিবাজ সরকারের ঢাল হিসেবে কাজ করছে অভিযোগ তুলে শাহবাজ গিল সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে ওই বাহিনীর সদস্যদের অন্যায় আদেশ না মানার আহ্বান জানিয়েছিলেন। এরপর তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীতে বিদ্রোহের উসকানি ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা করে শাহবাজ শরীফের নেতৃত্বাধীন সরকার। গত ৯ আগস্ট শাহবাজ গিলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়ের অধ্যাপক ডক্টর শাহবাজ গিল এর আগে ইমরান খান ক্ষমতায় থাকাকালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ইমরান খান ক্ষমতা ছাড়ার পর তাকে পিটিআই চেয়ারম্যানের চিফ অব স্টাফ নিয়োগ করা হয়।

গত সপ্তাহে গ্রেপ্তারের পর থেকে শাহবাজ গিলের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে পিটিআই। ৯ আগস্ট দুপুরে ইসলামাবাদে ইমরান খানের বাসভবনে যাবার পথে তাকে বানি গালা চক এলাকা থেকে গাড়ি থামিয়ে উঠিয়ে নেয় অজ্ঞাতপরিচয় একদল লোক।

পিটিআইর পক্ষ থেকে শাহবাজ গিলকে অপহরণের অভিযোগ আনার কয়েক ঘন্টা পর পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ ও তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে শাহবাজ গিলকে গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার করেন। আটকের পরবর্তী কয়েক ঘন্টা অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে গিয়ে শাহবাজ গিলের উপর অমানুসিক নির্যাতন চালানো হয় বলে ওইদিনই পিটিআইর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর উপর্যুপরি দুই দফা পুলিশী রিমান্ডে গিলের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন পাকিস্তানের একাধিক সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী। শাহবাজ গিলের ওপর নির্যাতন ও তার শারীরিক অবস্থার অবনতির খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটি পাকিস্তান সরকারের প্রতি নির্যাতন বন্ধ করার ও বিরোধী মতের সহনশীল মনোভাব প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।