চীনে প্রথমবারের মতো ‘ইয়েলো অ্যালার্ট’

তীব্র খরার কবলে পড়েছে চীন। দেশটির বেশিরভাগ অঞ্চলজুড়ে চলছে প্রচণ্ড তাপদাহ। এমন পরিস্থিতিতে ফসল বাঁচাতে প্রথমবারের মতো জাতীয় খরা সতর্কতা ‘ইয়েলো অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে। সতর্কতা জারির আওতায় খাদ্যশস্য রক্ষায় বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করেছে দেশটির সরকার। এছাড়া তাবদাহের কারণে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি বহাল রেখেছে দেশটির আবহাওয়া কর্তৃপক্ষ। টানা এক মাস ধরে রেড অ্যালার্ট চলছে। খবর আল জাজিরা।

চীনে প্রথমবারের মতো ইয়েলো অ্যালার্ট

চীনা কর্তৃপক্ষ জানায়, বৃহস্পতিবার শেষবেলায় জাতীয় খরা সতর্কতা ‘ইয়েলো অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে। এই মাত্রার সতর্কতা বেইজিংয়ের সবচেয়ে গুরুতর সতর্কতার চেয়ে দুই ধাপ কম।

এই পরিস্থিতির জন্য বৈশ্বিক জলবায়ুর পরিবর্তনকে দায়ী করছেন চীনের সরকারি কর্মকর্তারা।

রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, সাংহাইয়ের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সিচুয়ান এলাকায় ইয়াংশি নদীর উপত্যকাগুলোতে তীব্র দাবদাহ ও খরা দেখা দিয়েছে। ইয়াংশি নদীর গুরুত্বপূর্ণ বন্যা অববাহিকাগুলোর অন্যতম পোয়াং হ্রদ শুকিয়ে গেছে। হ্রদের আকার প্রায় এক-চতুর্থাংশ কমে গেছে।

চীনা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সিসিটিভি শুক্রবার জানিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় চংকিং এলাকার ৩৪টি কাউন্টিতে ৬৬টি নদী শুকিয়ে গেছে। সাধারণ বর্ষা মৌসুমের তুলনায় এবার চংকিংয়ে ৬০ শতাংশ বৃষ্টি কম হয়েছে। এতে বেশিরভাগ অঞ্চলে মাটির আর্দ্রতা হ্রাস পেয়েছে মাত্রাতিরিক্ত।

চংকিংয়ের উত্তরাঞ্চলে বেইবেই জেলায় বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা উঠে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। গতকাল শুক্রবার সকালেও চংকিংয়ের বিশান জেলায় তাপমাত্রা ছিল ৩৯ ডিগ্রি।

তীব্র তাপদাহের কারণে চংকিং এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে দাবানল। দাবানলের কারণে অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে। ওই অঞ্চলে অবকাঠামো ও জরুরি সেবাগুলো চাপ সামলাতে হিমশমি খাচ্ছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সতর্কতার আওতায় চংকিংয়ের কৃষি ব্যুরোর পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ শস্য রক্ষায় গঠন করা হয়েছে বিশেষ টিম। খরা প্রবণ এলাকায় পানির সরবরাহ ঠিক রাখার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে চীনা পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়।

চীনের জরুরি পরিস্থিতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কেবল জুলাই মাসেই শুধু উচ্চ তাপদাহে সরাসরি অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ২ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ইউয়ান। এর প্রভাব পড়েছে ৫৫ লাখ মানুষের ওপর।