চাল-ডালের পাশাপাশি প্রসাধনীপণ্যের বাজারও চড়া

দেশে চাল, ডাল, চিনি, তেল, পেঁয়াজসহ সব ভোগ্যপণ্যের দামই আকাশছোঁয়া। লাগামহীন দাম বৃদ্ধির হিড়িকে নিত্যপণ্যের বাজারে যখন চরম অস্থিতিশীলতা, তখন পিছিয়ে নেই প্রসাধনী সামগ্রীও। সাবান, শ্যাম্পু, টুথপেস্ট, ক্রিম, পারফিউমসহ সব টয়লেট্রিজ পণ্যের দাম চলে গেছে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।

প্রসাধনীপণ্যের বাজারও চড়া

শনিবার (২০ আগস্ট) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ও বিভিন্ন কসমেটিকসের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, মান ও প্রকারভেদে বেড়েছে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে সাবান-শ্যাম্পুর দাম। ৮০ টাকার ডাভ সাবান এখন ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ২০০ গ্রাম ওজনের ইমপেরিয়াল লেদার সাবান (থাইল্যান্ড) ৮৫ টাকা থেকে বেড়ে একলাফে হয়েছে ১৯৫ টাকা। শুধু এই দুই সাবানই নয়, মানভেদে বিভিন্ন কোম্পানির ৮০ টাকার গায়ে মাখা সাবানের দাম বেড়ে ১৩০-১৫০ টাকা হয়েছে।

সানসিল্ক শ্যাম্পু ৩২০ মিলি বোতলের দাম বেড়েছে ১০০ টাকা। আগে বিক্রি হতো ৩৬০ টাকায়, তা এখন বেড়ে ৪৬০ টাকা হয়েছে।

মানভেদে ২০০ গ্রাম ওজনের সব ব্র্যান্ডের টুথপেস্ট ১০-২০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ২০০ গ্রাম ওজনের কোলগেট টুথপেস্টের দাম ১৩০ থেকে বেড়ে এখন ১৫০ টাকা হয়েছে।

গুঁড়া সাবানেরও দাম বেড়েছে। ৮০ টাকার এক কেজি ওজনের গুঁড়া সাবান এখন ১৫০ টাকা।

বডি স্প্রের দামও বেড়েছে । ৪০০ মিলির নেভিয়া লোশনের দাম ছিল ৬২০ টাকা, এখন সেটি কিনতে লাগবে ৭৫০ টাকা।

রাজধানীর মৌচাক, গুলশান, মোহাম্মদপুরের জাপান সিটি গার্ডেন, আগোরা, মহাখালীর এস কে টাওয়ারের পাইকারিসহ খুচরা কসমেটিকস শপগুলোতে সব ধরনের প্রসাধনীর দামই বাড়তি।

দেশের প্রসাধনী আমদানিকারকরা বলছেন, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং প্রসাধনীতে শুল্ক বাড়িয়ে দেওয়ায় আমদানি খরচ বেড়েছে। তাই দামও বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন তারা।

সাধারণত ভারত, আমিরাত, থাইল্যান্ড, চীন, ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রসাধনীপণ্য আমদানি করেন দেশের আমদানিকারকরা। তাদের দাম পরিশোধ করতে হয় ডলার ও দিরহামে। এখন ৮৫ টাকার ডলার বেড়ে হয়েছে ১১৫ টাকা। দিরহামের দামও বেড়েছে। এছাড়া প্রসাধনীতে ৩৩ শতাংশ শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। ফলে প্রসাধনীপণ্যের দাম বাড়ছে।

গুলশান মক্কা ট্রেডার্স কসমেটিকস ফেয়ারের মালিক আরমান হোসাইন বলেন, ডলার ও দিরহামের দাম বাড়ায় প্রসাধনীতেও দাম বেড়ে গেছে। আমরা দুবাই থেকে প্রসাধনী নিয়ে আসি। ২৩ টাকার দিরহাম এখন ৩৬ টাকা। তাই বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তা না হলে ব্যবসায় লোকসান গোনা ছাড়া উপায় নেই।

বাংলাদেশ কসমেটিকস অ্যান্ড টয়লেট্রিজ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. জাহিরুল হক ভূইয়া বলেন,  একদিকে ডলারের দাম বেড়েছে, অন্যদিকে ডিউটি ট্যাক্স ৩৩ শতাংশ বেড়েছে। এসব কারণেই দাম বাড়ছে প্রসাধনী সামগ্রীর। ডলার ও দিরহামের দাম না কমলে সামনে আরও বাড়বে এসব পণ্যের দাম।

এদিকে, আমদানিনির্ভর ছাড়াও দেশে উৎপাদিত প্রসাধনীর দামও বাড়তি। বাংলাদেশ কসমেটিকস অ্যান্ড টয়লেট্রিজ ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য কাজী মঈন উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি করি। সেটা দিয়ে প্রসাধনী তৈরি করি। কাঁচামালের দামও বেড়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় কারখানা পরিচালনা খরচ বেড়েছে। তাই সাবান-শ্যাম্পুসহ সব ধরনের প্রসাধনী সামগ্রীর দামও বেড়েছে।