আল-আকসা মসজিদের জন্য আন্তর্জাতিক সুরক্ষার দাবি

ইসরায়েলি আগ্রাসন ও দখলদারির অপচেষ্টা থেকে আল-আকসা মসজিদের সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক গ্যারান্টির দাবি জানিয়েছে ফিলিস্তিন। আল-আকসা মসজিদে অগ্নিসংযোগের ৫৩তম বার্ষিকী উপলক্ষে এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ আহ্বান জানিয়েছে।

পবিত্র আল-আকসা ও জেরুজালেম নগরীর সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক গ্যারান্টি চেয়েছে ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বিবৃতিতে বলা হয়, পবিত্র আল-আকসা মসজিদ অব্যাহতভাবে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের চেষ্টার মুখোমুখি হচ্ছে। চারপাশের এলাকা থেকে এ পবিত্র স্থাপনাকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা চলছে, যাতে বিভিন্ন দিকে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা আল-আকসায় আসতে ও প্রার্থনা করতে না পারে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ আল-আকসায় আসার পথগুলোতে একের পর এক ব্যারিকেড আরোপ করছে, যার ফলে সেখানে মুসল্লির সংখ্যা কমছে।

এতে বলা হয়, আল-আকসা পুরোপুরি দখল করতে না পারলেও দখলদার কর্তৃপক্ষ চাইছে সেখানে সময়ের ভিত্তিতে বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপের মাধ্যমে পবিত্র স্থাপনাটিকে সাময়িকভাবে বিভাজিত করতে, যাতে একপর্যায়ে একে স্থানিকভাবেও বিভক্ত করার পথ তৈরি হয়।

ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে, আল-আকসাকে কেন্দ্র করে নিজেদের হীন চক্রান্ত বাস্তবায়নের জন্য দখলদার কর্তৃপক্ষ ইসলামি ওয়াকফ বিভাগ ও সেখানকার কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। আল-আকসায় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজের সুযোগ রুদ্ধ করতে এ অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, পবিত্র আল-আকসা ও জেরুজালেম নগরীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং এখান থেকে মুসলিম ও খ্রিস্টীয় সভ্যতার ছাপ মুছে পুরো নগরীকে ইহুদীকরণের লক্ষ্যে চারপাশে ইহুদী বসতি বাড়ানো হচ্ছে এবং বিভিন্ন স্থাপনায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

আল-আকসার অবমাননা ও অপরাধের জন্য দখলদার ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, কেবলমাত্র জেরুজালেমবাসীর প্রত্যয় ও দৃঢ় অঙ্গীকারের কারণে এ নগরীর খ্রিস্ট-মুসলিম চরিত্র ও আরব বৈশিষ্ট্য টিকে রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৬৯ সালের ২১ আগস্ট ভোরে ডেনিস মাইকেল রোহান নামে এক অস্ট্রেলীয় নাগরিক পবিত্র আল-আকসা মসজিদের মিম্বরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আরব দেশগুলোতে যে রাজনৈতিক-সামরিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয় সেটিকে ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর মধ্যপ্রাচ্যের সবচাইতে গুরুতর সংকট হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে। কয়েক ঘন্টা স্থায়ী ওই অগ্নিকাণ্ডে আল-আকসা মসজিদের রুপালী গম্বুজ, ছাদের একাংশ ছাড়াও পুড়ে যায় আটশো বছরের ঐতিহ্যবাহী দৃষ্টিনন্দন কারুকার্যখচিত কাঠ ও গজদন্তে নির্মিত মিম্বর, যা ক্রুসেডের মহান বীর সালাউদ্দিন আইয়ুবী ১২ শতকে উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন।