মঙ্গল গ্রহের নতুন একটি মানচিত্র প্রকাশ হয়েছে। মঙ্গল সম্পর্কে এতদিনের জ্ঞান ও ধারণাকেই বড় ধরনের নাড়া দিয়েছে এ মানচিত্র। রেড প্ল্যানেট নামে পরিচিত এ গ্রহ নিয়ে আগামী দিনের অনুসন্ধান ও গবেষণার ধরন-ধারণও পাল্টে দেবে এ মানচিত্র।

mars twsd মঙ্গলের বুকে বহু বিচিত্র খনিজের বিপিল সম্ভারের কথা জানান দিচ্ছে নতুন মানচিত্র

বর্তমানে শুষ্ক ও ধুলি-ধূসরিত হয়ে পড়া মঙ্গলে এক সময় পানির উপস্থিতি ছিল, এটা জানা কথা। কিন্তু গ্রহটি কত বেশি জলজ ছিল এবং কি অপার খনিজের উপস্থিতি সেখানে রয়েছে, তা ধারণার বাইরে ছিল। মার্স ওয়াটার ম্যাপ বা মঙ্গলে পানির উপস্থিতির মানচিত্র যে দৃশ্য তুলে ধরেছে, তাতে সাধারণ মানুষ তো বটেই, বিজ্ঞানীরাও কিছুটা হকচকিয়ে গেছেন।

বিষয়টি স্বীকারও করেছেন ইউরোপিয়ান ইনস্টিটিউট অব স্পেস অ্যাস্ট্রোফিজিকসের বিজ্ঞানী জন কার্টার। তিনি বলেন, আমরা সবাই মঙ্গল সম্পর্কে অতি সরলীকৃত ধারণা নিয়ে বসেছিলাম। এখন বুঝা যাচ্ছে, (মঙ্গলের) পুরোনো টপোগ্রাফি পর্যালোচনার সময় এসব খনিজের উপস্থিতি দেখতে না পাওয়া কিছুটা তাজ্জব ব্যাপার বটে।

এতদিন যাবত বিজ্ঞানীরা মঙ্গলে হাজারখানেক খনিজের উপস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন। এবার জানা গেল, হাজার নয়, কয়েক লাখ খনিজ পদার্থ বুকে ধারণ করছে পৃথিবীর এই প্রতিবেশী।

মঙ্গলের তথ্য সংগ্রহে গ্রহটির চারপাশে ঘুরছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির (ইএসএ) মার্স এক্সপ্রেস ও নাসার মার্স এক্সপ্লোরেশন অরবিটার। গত এক দশক ধরে এই দুই মহাকাশযানের পাঠানো তথ্যকে ভিত্তি করেই বিজ্ঞানীরা মঙ্গলে পানির উপস্থিতির এ যাবতকালের সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ মানচিত্র তৈরি করেছেন।

কিউরিয়সিটি খেয়াযানের বরাতে মঙ্গলের বুকে ধুলি দেখে আমরা আগেই জেনেছি এখন শুষ্ক হলেও গ্রহটিতে একসময় পানির উপস্থিতি ছিল। পানি মানেই রূপান্তরের কারিগর। মঙ্গলের বুকে যত বেশি জায়গাজুড়ে পানি বয়ে গেছে, তত বেশি পদার্থে রূপান্তর ঘটেছে ও নতুন নতুন খনিজ তৈরি হয়েছে।

যেমন- পানির সঙ্গ পেলে কাদায় রূপান্তরিত হয় মাটি। আবার কাদা শুকিয়ে একসময় ধুলিতে রূপ নেয়। অর্থাৎ, মাটি ও পানি এই দুই পদার্থ মিলে তৃতীয় আরেকটি পদার্থ কাদার সৃষ্টি হয়। একইভাবে, লোহা ও ম্যাগনেসিয়ামের সঙ্গে পানির বিক্রিয়া থেকে ভার্মিকুলাইট ও ক্লোরিট উৎপন্ন হয়। অ্যালুমিনিয়ামের সঙ্গে পানির বিক্রিয়া থেকে হয় স্মেকটাইট ও কাওলিন। পানির পরিমাণও বিবেচ্য। যত বেশি পানি বইবে, চূড়ান্ত খনিজটি ততই পরিবর্তিত হবে।

বস্তুর উপর আলোর প্রতিফলন পরিমাপ করা হয় স্পেকট্রোফটোমেট্রিক ডেটার সাহায্যে। মার্স এক্সপ্রেস ও মার্স এক্সপ্লোরেশন অরবিটাল দুটিতেই রয়েছে স্পেকট্রোফটোমিটার। মঙ্গলের বিভিন্ন অংশের স্পেকট্রোফটোমেট্রিক ডেটা দেখে জন কার্টার ও তার সহকর্মীরা সেখানে ভার্মিকুলাইট, ক্লোরিট, স্মেকটাইট, কাওলিন, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, সালফেট, কার্বোনেট ইত্যাকার হাজারখানেক খনিজের উপস্থিতির কথা আগেই জেনেছিলেন। এবার জানা গেল, মঙ্গলের পসরা আমাদের জানার চেয়েও অনেক বিশাল, অনেক বর্ণময়।

Stay ahead of the curve with the latest news and insights on technology, mobile computing, laptops, and outer space. Our team of expert writers brings you in-depth analysis of the latest trends and breakthroughs, along with hands-on reviews of the newest gadgets and devices. From the latest smartphones to the mysteries of the cosmos, we've got you covered.