তৃতীয় দেশের মাধ্যমে লেনদেন নিষ্পত্তি করবে কাবুল ও মস্কো

রাশিয়া থেকে আফগানিস্তানের তেল ও গ্যাস কেনার বিষয়ে দুই দেশের কর্মকর্তারা সমঝোতায় উপনীত হয়েছেন। উভয় দেশের বেশিরভাগ ব্যাংক মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত হওয়ায় তেল-গ্যাস ক্রয় সংক্রান্ত লেনদেন তৃতীয় একটি দেশের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হবে। রাশিয়া সফর শেষে দেশে ফিরে আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী নুরুদ্দীন আজিজি এ কথা জানিয়েছেন।

আফগানিস্তানের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা গতকাল রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন

আজিজি বলেন, দুই পক্ষের সমঝোতা অনুযায়ী তেল ও গ্যাস ক্রয়ের বিষয়ে শীঘ্রই আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর হবে। যেহেতু আফগানিস্তান ও রাশিয়ার বেশিরভাগ ব্যাংক নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে, তাই তৃতীয় একটি দেশের মাধ্যমে তেল-গ্যাসের মূল্য স্থানান্তর করা হবে। এ সংক্রান্ত খুঁটিনাটি চূড়ান্ত করতে আফগানিস্তানের টেকনিক্যাল টিমের কয়েকজন কর্মকর্তা এখন রাশিয়ায় অবস্থান করছেন।

রাশিয়া সফরকালে নুরুদ্দীন আজিজি অন্যান্য কর্মকর্তার পাশাপাশি তাতারস্তান প্রজাতন্ত্রের প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা তাতারস্তানের প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি এবং তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তারা আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন এবং এখানে আসতে প্রস্তুত রয়েছেন। তারা এলে আমরা কয়েকটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি করব।

আফগানিস্তান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট (এসিসিআই) জানিয়েছে, আফগানিস্তান ও রাশিয়ার ব্যাংকগুলো নিষেধাজ্ঞার আওতাভিক্ত হওয়ায় দুই দেশের মধ্যে লেনদেন নিষ্পত্তি কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এ কারণে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণও কমেছে। অন্যান্য দেশের চেয়ে রাশিয়ার পণ্য, বিশেষত তেল ও গম তুলনামূলক সাশ্রয়ী হওয়া সত্ত্বেও লেনদেন নিষ্পত্তির বাধার কারণে রাশিয়া থেকে পন্য কেনা দুরুহ হয়ে উঠেছে।

এসিসিআই সদস্য খান জান আলিকোজাই বলেন, ট্রানজিট ও পন্য স্থানান্তরে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছেন। সমুদ্রপথ না থাকায় পন্য আনতে হয় রেলপথে। যেসব দেশের মধ্য দিয়ে রেলপথ এসেছে, সেখানকার যে কোনোটির শুল্ক দপ্তরের সেবা নেওয়া যায়।

অর্থনীতিবিদ সাঈদ মাসুদ বলেন, ত্রিভুজ বাণিজ্যের সুযোগ নেওয়া যায়। মূলতঃ সোভিয়েত ইউনিয়ন একসময় পণ্য বিনিময়-ভিত্তিক ত্রিভুজ বাণিজ্য চালু করেছিল। এখন ব্যবস্থাটিকে লেনদেনের অবলম্বন হিসেবে কাজে লাগানো যায়।

আফগানিস্তানের প্রয়োজনীয় খাদ্য ও তেলের বেশিরভাগ রাশিয়া থেকে আমদানি করা হয়। কাবুল ও মস্কোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ বছরে প্রায় ২০ কোটি ডলার।