মার্কিন নৌযান প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে সলোমন আইল্যান্ডস

প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র সলোমন আইল্যান্ডসের সরকার সেদেশের বন্দরগুলোতে মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজ প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরাস্থ মার্কিন দূতাবাস আজ এ কথা জানিয়েছে। ক্ষুদ্র এ দ্বীপরাষ্ট্রের রাজধানীতে মার্কিন কোস্ট গার্ডের একটি জাহাজকে জ্বালানি সংগ্রহে বাধা দেওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় এ ঘোষণা এলো।

গত সপ্তাহে মার্কিন কোস্ট গার্ডের একটি নৌযানকে জ্বালানি সংগ্রহের অনুমতি দেয়নি সলোমন আইল্যান্ডস

সলোমন আইল্যান্ডস কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা সেদেশের বন্দরে সব ধরনের বিদেশি সামরিক নৌযান প্রবেশ সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে। বিদেশি নৌযানের আগমন সংক্রান্ত বিধি পর্যালোচনার পর এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

প্রথাগতভাবে বিদেশি নৌযানকে জ্বালানি সংগ্রহ, নোঙর ও অন্যান্য সুবিধা দিয়ে আসা সলোমন আইল্যান্ডসে নতুন এ স্থগিতাদেশকে পশ্চিমা দেশগুলো ভিন্ন চোখে দেখছে। অনেকে বিষয়টিকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশটিতে চীনের প্রভাব বৃদ্ধির প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন।

এর আগে গত সপ্তাহে মার্কিন কোস্ট গার্ডের কাটার অলিভার হেনরি ও ব্রিটিশ নৌবাহিনীর জাহাজ এইচএমএস স্পে জ্বালানি সংগ্রহের জন্য হোনিয়ারায় নোঙর করতে চাইলে সলোমন আইল্যান্ডস কর্তৃপক্ষ দুটি জাহাজকেই অনুমতি দিতে অস্বীকার করে।

এ বিষয়ে সলোমন আইল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মানাসেহ সোগাবার বলেন, মার্কিন ও ব্রিটিশ জাহাজ দুটি যথাসময়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে না পারায় তাদের প্রবেশ অনুমোদন দেওয়া সম্ভব হয়নি। এ ঘটনা থেকে স্পষ্ট যে সলোমন আইল্যান্ডে সফররত সামরিক নৌযানের অনুমোদন প্রক্রিয়া পর্যালোচনা জরুরি হয়ে উঠেছে।

তিনি আরও বলেন, সলোমন আইল্যান্ডসে সফর ও মহড়ার পরিকল্পনা করছে যেসব দেশ, তাদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে যাতে তারা বিধিবিধান পর্যালোচনা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত নৌযান পাঠানো স্থগিত রাখে।

সলোমন আইল্যান্ডসের আরোপিত স্থগিতাদেশের কারণে চীনের কোনো নৌযানের সেদেশে প্রবেশ ব্যাহত হয়েছে কিনা জানা যায়নি।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের সঙ্গে সলোমন আইল্যান্ডসের সম্পর্ক জোরদার হয়ে উঠেছে। সলোমন আইল্যান্ডসের অর্থনীতিতে চীনের প্রভাব এমনিতেই প্রবল। দেশটিতে চীনা ব্যবসায়ীদের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিনিয়োগ রয়েছে। কয়েক বছর আগে চীনের সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরের পর সলোমন আইল্যান্ডস সরকার তাইওয়ানের স্বীকৃতি বাতিল করে।

বিগত বছর চীনের সঙ্গে একটি নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর করে সলোমন আইল্যান্ডস। এ চুক্তিতে সলোমন আইল্যান্ডসে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়োজনে চীনকে সেনা মোতায়েনের এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে। চীন সেখানে একটি সামরিক ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে বলে যুক্তরাষ্ট্র ও সমমনা দেশগুলো অভিযোগ করেছে। তবে সলোমন আইল্যান্ডস এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে।