সমর্থকদের গ্রিন জোন ছাড়তে বললেন মুকতাদা সদর

ইরাকের প্রভাবশালী শিয়া নেতা মুকতাদা আল-সদর তার সমর্থকদের এক ঘণ্টার মধ্যে বাগদাদের গ্রিন জোন ছাড়তে বলেছেন। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।

একদিন ধরে সহিংসতা চলার পর সমর্থকদের বাগদাদের গ্রিন জোন ছাড়তে বলেছেন মুকতাদা আল-সদর

এর আগে সোমবার দুপুরে মুকতাদা সদর সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে চিরতরে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিলে তার সমর্থকরা ইরাকজুড়ে তাণ্ডবলীলায় মেতে ওঠে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সদরের মাহদী আর্মি ও পিস ফোর্সের হাজার হাজার সমর্থক গাড়ি ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বাগদাদের গ্রিন জোনে ঢুকে পড়ে। তারা ইরাকি প্রেসিডেন্টের বাসভবন রিপাবলিকান প্যালেস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন দখল করে নেয়।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সদর সমর্থকদের সঙ্গে ইরাকী নিরাপত্তা বাহিনী ও পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সের সংঘর্ষে এক সৈন্যসহ কমপক্ষে ৩০ জন নিহত ও তিন শতাধিক আহত হয়েছে। বাগদাদের সংরক্ষিত এলাকা গ্রিন জোনসহ নগরীর পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের বহু এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। বাগদাদের পথে ইরাকী সামরিক বাহিনীর সাঁজোয়া যানের টহল দেখা যাচ্ছে। গ্রিন জোনের ভবনগুলোতে সদর সমর্থকরা রকেট প্রপেলড গ্রেনেড, মর্টার ছুঁড়ছে। সেখানে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসেও মর্টার হামলার ঘটনা ঘটেছে।

বাগদাদ, বসরাসহ কয়েকটি শহরে সদর সমর্থক ও বিরোধীরা পরস্পরের অনেকগুলো কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেছে। রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর দোকানপাটে এরইমধ্যে তৈরি খাদ্য ও অন্যান্য জরুরি পন্যের সংকট দেখা দিয়েছে বলে সামাজিক মাধ্যমে অনেকে জানিয়েছেন।

একদিন ধরে ধ্বংসযজ্ঞ চলার পর সদরের সংবাদ সম্মেলন ও গ্রিন জোন ছাড়ার নির্দেশনাকে পর্যবেক্ষকরা প্রহসন বলে অভিহিত করেছেন।

ল্যাঙ্কাস্টার ইউনিভার্সিটির পোস্ট-ডক্টরাল রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট রুবা আলী আল-হাসনি বলেন, আমি তার বক্তব্যে একদম অবাক হইনি। বরাবরের মতোই তিনি দায়িত্ব অস্বীকার করেছেন। ভাবখানা এমন যেন গত ২৪ ঘন্টায় যা হয়েছে তাতে তার কোনো দায় নেই।

তিনি বলেন, আমরা সবাই জানি যা কিছু ঘটেছে তার কেন্দ্রে রয়েছেন সদর। তার পদত্যাগের ঘোষণা থেকেই গত ২৪ ঘণ্টার ঘটনাগুলো ঘটে। তার সমর্থকরা তাকে অন্ধের মতো অনুসরণ করে। সমর্থকদের অন্ধ আনুগত্যকে তিনি মনস্তাত্ত্বিক অস্ত্র হিসেবে প্রয়োগ করছেন।

যদিও ইরাকের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল-কাজিমী মুকতাদা সদরের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন। টুইটারে এক পোস্টে তিনি লেখেছেন- সহিংসতা অবসানে মান্যবর মুকতাদা আল-সদরের আহ্বান হলো দেশপ্রেম এবং ইরাকী রক্তের পবিত্রতার প্রতি শ্রদ্ধার চূড়ান্ত রূপ।

ইরাকে জাতিসংঘ সহায়তা মিশন (ইউএনএএমআই) মুকতাদা সদরের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, সৈয়দ মুকতাদা আল-সদর সর্বসম্প্রতি যে উদার ঘোষণা দিয়েছেন, ইউএনএএমআই তাকে স্বাগত জানাচ্ছে। আমরা গতকালও বলেছি, যুক্তির বিজয় নিশ্চিত করতে হলে সংযম ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।