অক্টোবরেই উৎপাদনে যাচ্ছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র

আগামী অক্টোবরেই বিদ্যুতের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করতে যাচ্ছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে নির্মিত বহুল আলোচিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্র।

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র

বাগেরহাটের রামপালে নবনির্মিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দাপ্তরিক নাম বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল)। তবে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নামেই পরিচিতি পেয়েছে স্থাপনাটি।

প্রকল্প পরিচালক সুভাস চন্দ্র পান্ডে জানান, অক্টোবরের শেষ নাগাদ খুলনা অঞ্চলের জন্য ইউনিট-১ এর মাধ্যমে একটি লাইনে ৬৬০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। গত ১৫ আগস্ট ৯১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে লোড দেওয়া হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে তা বাড়িয়ে সক্ষমতা যাচাই করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় রামপালে আনুষ্ঠানিক বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ঘোষণা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তারা।

প্রধানমন্ত্রী সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভারত সফরে যাচ্ছেন। এই সফরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিদ্যুৎকেন্দ্রটির বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেবেন। প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, পুরো প্রকল্পের কাজ ৮২ দশমিক ২৫ শতাংশ শেষ হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে দুটি ইউনিটের মাধ্যমে দুটি অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। এর মধ্যে ইউনিট-১ খুলনা অঞ্চলের জন্য, যা শিগগিরই চালু হচ্ছে। আর ইউনিট-২ উৎপাদনে যাবে আগামী বছরের মার্চ নাগাদ। ইউনিট-২ উৎপাদনের মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরো সক্ষমতা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে।

রামপালের পশুর নদীর তীরে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ তৈরির প্রধান কাঁচামাল হবে কয়লা। তবে দেশীয় কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে না। সেজন্য বিশেষ গ্রেডের কয়লা আমদানি করতে হবে ইন্দোনেশিয়া, আফ্রিকার দেশ বা মোজাম্বিক থেকে। এখন ইন্দোনেশিয়ার কয়লা ব্যবহার করেই ট্রায়াল উৎপাদন কার্যক্রম চলছে।

বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের পাশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের শুরু থেকেই পরিবেশবাদীরা বিরোধিতা করে আসছিলেন। তাদের শঙ্কা, বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে ব্যবহৃত কয়লা উচ্চতাপ সৃষ্টি করবে, বাতাস দূষিত হবে। এছাড়া কয়লা নিয়ে জাহাজ চলাচলের কারণে নদীর পানি দূষিত হয়ে সুন্দরবনের জীব-বৈচিত্র্যের ভারসাম্য নষ্ট হবে।

তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পরিবেশের ক্ষতি ন্যূনতম মাত্রায় রেখেই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে।