জীবন্ত চড়ুইপাখি দিয়ে টোপ, ফাঁদে ১৫০ বিড়াল

পূর্ব চীনে ১৫০টি বিড়াল উদ্ধার করেছে পুলিশ। মাংস বিক্রির জন্য এসব বিড়াল খাঁচায় বন্দি করা হয়েছিল। পুলিশ অভিযোগ পেয়ে সেগুলো উদ্ধার করে। আন্তর্জাতিক প্রাণী কল্যাণ সংস্থা হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল (এইচএসআই) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শানডং প্রদেশের পূর্বাঞ্চলীয় শহর জিনানে একটি মরিচা ধরা খাঁচায় বিড়ালগুলোকে আটকে রাখা হয়েছিল। খবর স্ট্রেইট টাইমস।

পূর্ব চীনে ১৫০টি বিড়াল উদ্ধার করেছে পুলিশ

স্থানীয় প্রাণী অধিকার গ্রুপ ভিশাইন-এর একজন কর্মী জানিয়েছেন, একদল প্রাণী শিকারি টোপ হিসেবে চড়ুইপাখি খাঁচায় রাখে এবং প্রতিটি বিড়াল প্রবেশের সাথে সাথে ফাঁদে আটকে যায়। ফাঁদ পরিচালনা করতে রিমোট কন্ট্রোল ব্যবহার করা হয়েছিল। আটকে পড়ার পর বিড়ালগুলো বিষণ্ন ছিল এবং চিৎকার করছিল।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিড়ালদের প্রলুব্ধ করার জন্য টোপ হিসাবে ব্যবহৃত কয়েক ডজন জীবন্ত চড়ুই খাঁচাই বন্দি করা হয়েছিল। উদ্ধার করা বিড়ালগুলোর বেশিরভাগই বাড়ির পোষা প্রাণী এবং সেগুলো স্থানীয় প্রাণী আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। অধিকারকর্মীরা ঘটনাস্থলে ৩১টি চড়ুই খুঁজে পেয়েছেন। চড়ুইগুলো চীনের একটি সুরক্ষিত প্রজাতি এবং সেগুলো আবার বনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

চীনে কোনো পশু নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধ আইন না থকলেও সন্দেহভাজনরা পাখি শিকার, সম্পত্তি চুরি এবং প্রাণী মহামারি প্রতিরোধের নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য শাস্তির মুখোমুখি হতে পারে। এইচএসআই অনুসারে, চীনে প্রতি বছর প্রায় ১০ মিলিয়ন কুকুর এবং চার মিলিয়ন বিড়াল মানুষের খাওয়ার জন্য হত্যা করা হয়।

কুকুর ও বিড়ালের মাংস চীনের কিছু অংশে একটি সুস্বাদু খাবার হিসাবে বিবেচিত হয় এবং এই মাংসের বাণিজ্য পোষা প্রাণী চুরি করতে অপরাধী দলকে উৎসাহিত করে। যদিও এ ধরনের চুরির ঘটনা আগের চেয়ে হ্রাস পেয়েছে। প্রতি জুনে দক্ষিণ চীনের ইউলিন শহরে একটি কুকুরের মাংস উৎসব হয়, যেখানে জীবিত কুকুর এবং বিড়াল খাওয়ার জন্য বিক্রি করা হয়।

এইচএসআই চীন নীতি বিশেষজ্ঞ ড. পিটার লি বলেন, দক্ষিণ চীনের গুয়াংডং ও গুয়াংসি প্রদেশে কুকুর এবং বিড়াল খাওয়ার ঐতিহ্য হাজার হাজার বছর আগের। এগুলো চীনের দুটি প্রধান বিড়ালের মাংস খাওয়ার হটস্পট। চীনের মূল ভূখণ্ডের বাকি অংশে বিড়ালের মাংস মোটেও খাদ্য সংস্কৃতির অংশ নয়।

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব বিড়াল এবং কুকুরের মাংস খাওয়ার প্রবণতা কমিয়ে দিয়েছে। এই রোগটি উহানের কেন্দ্রীয় শহরের একটি বাজারে রাখা জীবন্ত পশু থেকে ছড়িয়ে পড়ে বলে মনে করা হয়। চীন ২০২০ সালে বন্যপ্রাণীর ব্যবহার এবং ব্যবসা নিষিদ্ধ করে। প্রথমবারের মতো সেনজেন ও ঝুহাইয়ের গুয়াংডং শহরে কুকুর এবং বিড়াল খাওয়া নিষিদ্ধ হয়।