আপনি পড়ছেন

যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানে তৈরি অস্ত্রে সয়লাব হয়ে গেছে ইরাক। পাশাপাশি রাশিয়া, বুলগেরিয়া, যুগোস্লাভিয়ার কিছু অস্ত্র ও সেগুলোর প্রোটোটাইপ ছড়িয়ে পড়েছে দেশটিতে। গত দুদিনে ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে প্রভাবশালী শিয়া রাজনীতিক ও ধর্মগুরু মুকতাদা আল-সদরের অনুসারীদের সংঘর্ষে স্পষ্ট হয়েছে অস্ত্র কেনা ও সংগ্রহ করা কতটা সহজ হয়ে পড়েছে ইরাকে।

iraq green zone tlsd এক ঘণ্টারও কম সময়ে বাগদাদের গ্রিন জোনে ঢুকে পড়েছিল সদর সমর্থকরা

সোমবার দুপুরে মুকতাদা আল-সদর সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে চিরতরে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দেন। ইরাকে সরকার গঠন নিয়ে মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দশ মাস ধরে দর কষাকষি ও মনোমালিন্যের পর তিনি আকষ্মিক এই ঘোষণা দেন। এর জেরে সোমবার দুপুরেই দীর্ঘ গাড়িবহর নিয়ে পথে নামে আল-সদরের বিপুল সংখ্যক অনুসারী-সমর্থক।

বিশ্লেষকরা জানান, দুইদিনের সংঘর্ষে সদরের অনুসারী সারায়া আল সালাম বা পিস ব্রিগেড সদস্যদের হাতে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে এম১৬ রাইফেল। পাশাপাশি এম৪ প্যাটার্ন কারবাইনও ছিল। ইরাকে এখন সহজলভ্য হয়ে পড়া এসব অস্ত্র ইরাকি সেনাবাহিনী ও কুর্দি পেশমেরগা মিলিশিয়া বাহিনীকে দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র সরকার। এ দুটি নিয়মিত বাহিনীর কাছ থেকেই অস্ত্র চলে গেছে অনিয়মিত গোষ্ঠীগুলোর কাছে।

ইরাকের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দখল নেওয়া দলটির সদস্যদের হাতে ছিল এম১৬-এ২ ও এম১৬-এ৪ দুই সংস্করণের রাইফেল। বেশকিছু ছবি ও ভিডিওতে পিস ব্রিগেড সদস্যদের পিকে/এম মেশিন গান গান ৭.৬২ বাই ৩৯মিমি একে রাইফেলও বহন করতে দেখা যায়। সদরপন্থীদের ব্যবহৃত একে রাইফেলের মধ্যে যুগোস্লাভিয়ার তৈরি জাস্তাভা ও ইরাকি সংস্করণ তাবুক দুইটিই নজরে পড়েছে।

ইরাকি কর্মকর্তারা জানান, সদরের মাহদি আর্মি ও পিস ব্রিগেড সদস্যরা ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীর অবস্থান ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা লক্ষ্য করে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় ওজি-৭ ও পিজি-৭ভি রকেট ছুড়েছে। রাশিয়া, বুলগেরিয়া, ইরান, রোমানিয়া ও চীন এসব রকেট প্রস্তুত করে থাকে। কালোবাজার হয়ে এসব অস্ত্র পৌঁছে গেছে ইরাকের মিলিশিয়াদের হাতে।

সদরপন্থীদের অনেকগুলো গাড়িতে ১৪.৫ বাই ১১৪ মিমি কেপিভি ভ্যারিয়েন্ট হেভি মেশিন গান সংযুক্ত দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপের অনেক দেশে তৈরি হয় এসব অস্ত্র। এছাড়া অস্ট্রিয়ায় তৈরি স্টেয়ার অ্যান্টি-ম্যাটেরিয়াল রাইফেলের ইরানি সংস্করণ সাইয়াদ বহন করেছে পিস ব্রিগেডের অনেকে। একইসঙ্গে, ইরানে তৈরি নারোল্লাহ ও হাদিদ মর্টারও ব্যবহৃত হয়েছে গত দুইদিনের সংঘর্ষে।

সোমবার এক ঘণ্টারও কম সময়ে সদর সমর্থকরা নিরাপত্তা বেষ্টনি ভেঙ্গে বাগদাদের সবচেয়ে সুরক্ষিত ও সংরক্ষিত এলাকা গ্রিন জোনে ঢুকে পড়ে এবং প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন রিপাবলিকান প্যালেসসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা দখলে নেয়। বাগদাদের বাইরেও বিভিন্ন শহরে তারা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দুই পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩০ জন নিহত ও সাত শতাধিক আহত হয়। এর আগে পথে পথে ছড়িয়ে পড়া সংঘর্ষে ইরাক যেন হয়ে উঠেছিল সহজে বহনযোগ্য আগ্নেয়াস্ত্রের প্রদর্শনী। মূলধারার গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে দেদারসে শেয়ার হওয়া ছবি ও ভিডিওতে সদরের তরুণ সমর্থকদের হাতে দেখা গেছে বিভিন্ন ধরণের রাইফেল, হালকা ও ভারি মেশিন গান, গ্রেনেড, মর্টার ও রকেট।

সেনা ও পুলিশের মতো নিয়মিত বাহিনীর ব্যবহার্য অস্ত্রের এমন ঝনঝনানি ইরাক সম্পর্কে অনেকের মনে নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। সমরাস্ত্র বিষয়ক ব্লগারদের বিশ্লেষণে বেরিয়ে এসেছে, সদর সমর্থকদের হাতে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানে তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র। ইরাকে উদ্বেগজনক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়া এসব অস্ত্র এখন দেশটিতে খোলা বাজারেও অনেকে সংগ্রহ করছে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.