বন্যাবিধ্বস্ত পাকিস্তানে ‘মানবিক ট্রেন’ পাঠাল তুরস্ক

বন্যাবিধ্বস্ত পাকিস্তানিদের জন্য সহায়তা নিয়ে একদিনের ব্যবধানে দুটি কাইন্ডনেস বা মানবিক ট্রেন পাঠিয়েছে তুরস্ক। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা পানির নিচে থাকায় দেশটির নাগরিকদের দুর্ভোগ এখন চরমে পৌঁছেছে। খবর আনাদোলু।

প্রথম মানবিক ট্রেনের যাত্রা

তুর্কি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানী আঙ্কারা থেকে ছেড়ে যাওয়া দ্বিতীয় ট্রেনটি ৩৯৪ টন ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে যাচ্ছে। চালানগুলো সমন্বয় করছে তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএফএডি)। ট্রেনটির বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এএফএডি সভাপতি ইউনুস সেজার এবং আঙ্কারায় পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ সাইরাস সাজ্জাদ কাজী। এর আগে গত মঙ্গলবার রাজধানী আঙ্কারা থেকে অনুরূপ আরেকটি ট্রেন পাকিস্তানের উদ্দেশে রওয়ানা দেয়।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আসিম ইফতিখার আহমেদ কঠিন সময়ে তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এএফএডি) সমন্বয়ে বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) সহায়তায় ত্রাণ সরবরাহের জন্য তুরস্ককে ধন্যবাদ জানান। এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, পাকিস্তান ও তুরস্ক অনেক আগে থেকেই কঠিন সময়ে একে অপরকে সমর্থন করে আসছে।

যাত্রা শুরু করছে দ্বিতীয় মানবিক ট্রেন

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও টুইটারে এ সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে লেখেন, আমার ভাই প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান পাকিস্তানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য মানবিক সহায়তা প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

দুটি ট্রেন ছাড়াও আটটি বিমানে করে এ পর্যন্ত পাকিস্তানে ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছে তুরস্ক। দেশটি এর আগে ঘোষণা দিয়েছিল, পাকিস্তানের সাহায্যার্থে তারা বিমান সেতু তৈরি করবে।

পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির মতে, জুনের মাঝামাঝি থেকে শুরু হওয়া বন্যায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মারা গেছেন। দশ লাখেরও বেশি বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাড়ে তিন কোটি লোক। সবমিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণটি বিশাল। আর্থিক সংকটে পড়া পাকিস্তান এ বন্যায় কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়েছে।

আবহাওয়াবিদদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্বের ১০টি দেশের মধ্যে অন্যতম পাকিস্তান। দেশটিতে এই বছর গড় মৌসুমি বৃষ্টিপাতের চেয়ে ২০০ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। ফলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার শিকার হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটি।