নাসিমের ছক্কায় ৩৬ বছর আগের সেই মিঁয়াদাদের ছাঁয়া

কতটা রোমাঞ্চ, বিনোদন, স্নায়ুক্ষয়ী লড়াই আশা করা যায় একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচে। কুড়ি ওভারের একটা বুধবার ক্রিকেট দুনিয়ার হৃদকম্পন তুলে দিয়েছিল। এশিয়া কাপে দুই প্রতিবেশী পাকিস্তান-আফগানিস্তানের ম্যাচটা ছিল রীতিমতো থ্রিলার।

নাসিমের ছক্কায় ৩৬ বছর আগের মিঁয়াদাদের ছাঁয়া

শারজার মরুর বুকে শ্বাসরোধী স্ক্রিপ্টই মঞ্চস্থ হয়েছে বুধবার। ভারতীয় ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জেরকার তো বলেই দিয়েছেন, আমি আর নিতে পারছি না। ম্যাচের শেষ তিন ওভারের গল্পটা হয়তো আপনার কল্পনাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে।

শেষ ১৮ বলে জয়ের জন্য ২৫ রান দরকার ছিল পাকিস্তানের। ১৮তম ওভারে বল করতে এসে জোড়া উইকেট তুলে নেন আফগান বাঁহাতি পেসার ফজল হক ফারুকি। প্রথম বলে নেওয়াজ ও শেষ বলে খুশদিল শাহকে সরাসরি বোল্ড করে সাঝঘরে ফেরান তিনি। ফরিদ আহমেদ ১৯তম ওভারে দ্বিতীয় বলে বোল্ড করেন হারিস রউফকে। তখনও পাকিস্তানের জয়ের বিশ্বাস অটুট। কারণ অপর প্রান্তে যে আসিফ আলি আছেন। চতুর্থ বলে স্ট্রাইক পেয়েই আসিফ আলি হাঁকালেন বিশাল ছক্কা। পঞ্চম বলেই বাউন্সারের শিকার হয়ে সাঝঘরে ফেরেন আসিফ। এ যেন সেরের ওপর সোয়া সের।

নবম উইকেট হারিয়ে কাঁপছে পাকিস্তান। শেষ ওভারে দরকার ১১ রান। উইকেটে নাসিম শাহ-হাসনাইনের শেষ জুটি। রোমাঞ্চ তখন চূড়ায় পৌঁছে গেছে।

ফারুকির প্রথম বলে ছক্কা মেরে দেন নাসিম শাহ। ইয়র্কার মিস করে ফুলটস দিয়ে ছক্কা হজম করেন এই আফগান বাঁহাতি পেসার। পরের বলেও ইয়র্কার মিস এবং ফুলটস। নাসিমের ব্যাট নামক চাবুকের আঘাতে এবারও একই পরিণতি হলো। বল রশিদ খানের মাথার উপর দিয়ে সীমানার বাইরে।

ধূলি ঝড় না হলেও নাসিম শাহর ঝড়ে মুহূর্তেই বিলীন হয়ে যায় আফগানদের স্বপ্ন। ১ উইকেটের অবিশ্বাস্য জয়ে ফাইনালে উঠে যায় পাকিস্তান। ভারতকে নিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে আফগানদের বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায়।

ম্যাচ শেষে পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম বলেছেন, নাসিমের দুই ছক্কা তাকে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে ৩৬ বছর আগের শারজায়। যেখানে জাভেদ মিঁয়াদাদ শেষ বলে ছক্কা মেরে ট্রফি জিতিয়েছিলেন পাকিস্তানকে।

১৯৮৬ সালে অস্ট্রেলেশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে জয়ের জন্য ম্যাচের শেষ বলে ৪ রান দরকার ছিল পাকিস্তানের। স্ট্রাইকে ছিলেন কিংবদন্তি জাভেদ মিঁয়াদাদ। বড়ে মিয়া খ্যাত এই ব্যাটসম্যান চেতন শর্মাকে বিশাল ছক্কা মেরে জয় তুলে নেন।

বাবর বলেন, ‘ভেতরে ভেতরে মনে হয়েছে এটা ক্রিকেট কিছু হতেই পারে। নাসিমকে এমন ব্যাটিং করতে আগেও দেখেছি। তাই আমার মনে সামান্য কিছুটা বিশ্বাস ছিল। আমাকে জাভেদ মিঁয়াদাদের ছক্কার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে।’