মানবাধিকার হাইকমিশনের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল চীন, বাংলাদেশকেও সতর্কতা

জিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতন নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ব্যাপক ক্ষেপেছে চীন। দেশটি জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছে। জেনেভায় জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত শুক্রবার জানিয়েছেন, পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং অঞ্চলে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বেইজিং জাতিসংঘের সংস্থাটিকে আর সহযোগিতা করবে না। খবর রয়টার্স।

রাষ্ট্রদূত চেন জু

গত ৩১ আগস্ট ওই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়েছে, চীনে 'গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা হয়েছে'। জিনজিয়াংয়ে উইঘুর এবং অন্যান্য মুসলমানদের আটক করে নির্যাতন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।

রাষ্ট্রদূত চেন জু সাংবাদিকদের বলেন, জাতিসংঘের সংস্থা তথাকথিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে সহযোগিতার দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। প্রতিবেদনটিকে তিনি 'অবৈধ' বলে বর্ণনা করেছেন। চীন জোরপূর্বক জিনজিয়াংয়ে কোনো ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনরে বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে।

দীর্ঘ প্রতীক্ষিত প্রতিবেদনটি জাতিসংঘের বিদায়ী হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের অফিস প্রকাশ করে। হাইকমিশনারের মেয়াদ শেষ হয় গত ৩১ আগস্ট। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট আগে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছিল। এর আগে মে মাসে চীন সফর করেন তিনি। ওই সময় ব্যাচেলেট জানান, বেইজিংয়ে হাইকমিশনের ফলোআপ ভিজিট হতে পারে।

রাষ্ট্রদূত চেন জু সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিবেদন প্রকাশের কারণে চীনের পরিকল্পনা বদলে গেছে। এখন আর সংস্থাটির সাথে আগের মতো সম্পর্ক চালিয়ে নেওয়া সম্ভব না। জাতিসংঘের যে অধিবেশনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়, সেই অধিবেশনে চীনা দূতও উপস্থিত ছিলেন। তিনি প্রতিবেদনের তীব্র বিরোধিতা করেন।

বাংলাদেশকে সতর্ক করল চীন

এদিকে বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং ওয়াশিংটনকে চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলে 'জোরপূর্বক শ্রম' সম্পর্কে মিথ্যা ছড়ানোর অভিযোগ করেছেন। তার দাবি, বাংলাদেশের আরএমজি ব্যবসার ক্ষতি করতে পারে এমন প্রচারণার বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে সতর্ক থাকতে হবে। মঙ্গলবার চীনা দূতাবাসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করা এক ভিডিওতে তিনি এ কথা বলেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত মাসে চীনের জিনজিয়াং অঞ্চল থেকে পণ্যের আমদানি নিষেধাজ্ঞা দেয়। বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পের কাঁচামাল চীন থেকে আমদানি করার ক্ষেত্রে সতর্কতা দিয়েছে দেশটি। ওয়াশিংটনে দাবি, বেইজিং উইঘুরদের জোর করে শ্রম খাতে কাজে লাগাচ্ছে ও গণহত্যা চালাচ্ছে।