জাতিসংঘ: মিয়ানমারের যুদ্ধাপরাধের লাখো তথ্য দিয়েছে ফেসবুক

মিয়ানমার ইস্যুতে জাতিসংঘ তদন্তকারী দলের প্রধান নিকোলাস কৌমজিয়ান বলেছেন, ফেসবুক এমন লাখ লাখ তথ্য হস্তান্তর করেছে, যা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ওঠা যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে সমর্থন জোগাতে পারে। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে এক ভাষণে তিনি এ কথা জানান। খবর রয়টার্স।

২০১৭ সালে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগে মিয়ানমার এখন আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) বিচারের মুখোমুখি রয়েছে। ২০১৭ সালে দেশটির রাখাইনে সেনাসহ সরকারের অন্যান্য বাহিনীর হত্যা-নির্যাতনের মুখে প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। বর্তমানে বাংলাদেশে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে।

২০১৮ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার তদন্তকারীরা দাবি করেছিলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি কিছু বিদ্বেষী বক্তব্য ছড়িয়েছে, যা মিয়ানমারে সহিংসতাকে উস্কে দিয়েছে। পরে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এ ধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য বন্ধ করতে কাজ করে।

সম্প্রতি বাংলাদেশে আসার ৫ বছর পূর্তিতে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে

ফেসবুক জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের জন্য মিয়ানমারের জবাবদিহিতা আদায়ে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে তারা।

ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার মানবাধিকার নীতি পরিচালক মিরান্ডা সিসন্স এক ই-মেইল বার্তায় বলেন, আমরা জাতিসংঘ তদন্ত সংস্থার কাছে স্বেচ্ছায় ও বৈধ উপায়ে তথ্য প্রকাশ করেছি। গাম্বিয়াকেও মিয়ানমার ইস্যুতে তথ্য দিয়েছিলাম। গাম্বিয়া ওই তথ্যের ভিত্তিতে পরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

নিকোলাস কৌমজিয়ান বলেন, ফেসবুক নিজের নেটওয়ার্কের অসংখ্য অ্যাকাউন্ট থেকে লাখ লাখ তথ্য আইআইএমএমকে দিয়েছে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ওইসব ভুয়া নাম-ঠিকানার অ্যাকাউন্টও বন্ধ করে দিয়েছে।

কৌমজিয়ান বলেন, ফেসবুকের তথ্যসহ ২০০টিরও বেশি উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আইআইএমএম ৬৭টি ‘প্রমাণ ও বিশ্লেষণমূলক প্যাকেজ‘  তৈরি করেছে। তথ্যের এই প্যাকেজগুলো আইসিসি ও আইসিজেসহ বিচারিক কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

সদস্য রাষ্ট্র বাংলাদেশে জোরপূর্বক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নির্বাসন এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিষয়ে একটি মামলাও চালু করেছে আইসিসি। তবে গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে মিয়ানমার বলছে, তাদের সশস্ত্র বাহিনী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বৈধ অভিযান পরিচালনা করেছে।